২:৫১ অপরাহ্ন

মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : মার্চ ২৩, ২০২১ ৭:৩৬ অপরাহ্ন
দাকোপে লবণাক্ত জমিতে বিনাচাষে সূর্যমুখী ও গম চাষ
কৃষি গবেষনা

খুবির এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের গবেষণা প্রকল্পের আওতায় দাকোপে লবণাক্ত জমিতে বিনাচাষে সূর্যমুখী ও গম চাষ এবং সার ব্যবস্থাপনার উপর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের গবেষকবৃন্দ খুলনার দাকোপে লবণাক্ত জমিতে বিনাচাষে সূর্যমুখী ও গম ফসলের চাষাবাদ এবং সার ব্যবস্থাপনার উপর একটি গবেষণা পরিচালিত করছেন। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (KGF) বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচার রিসার্চ (ACIAR) এর আর্থিক সহযোগিতায় এই গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে। আজ ২৩ মার্চ ২০২১ খ্রি. তারিখ মঙ্গলবার দাকোপ উপজেলার পানখালীতে এই গবেষণা প্রকল্পের প্রদর্শনী প্লটে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন আয়োজিত এ মাঠ দিবসে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আলোচনা করেন খুুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ সারওয়ার জাহান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ হাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুবির এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ মনিরুল ইসলাম, খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোর্তজা নজরুল। স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ এনামুল কবির। অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন দাকোপ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ, কৃষক সমিতির সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, কৃষাণী গীতা বালা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের সহ-গবেষক এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক বিধান চন্দ্র সরকার।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, খুলনা অঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে কৃষকদের ধান চাষের পর যে সময়টা পাওয়া যায় সেটা কাজে লাগিয়ে বিনাচাষে সূর্যমুখী ও গম ফসল চাষাবাদ করা যাবে। পরিমিত পরিমাণে ইউরিয়া সার ব্যবহার করেই ধান তোলার পর দ্বিতীয় ফসলের চাষাবাদ করা সম্ভব। আগস্টের মাঝামাঝি ধান রোপণ করলে দ্বিতীয় ফসল চাষে সুবিধা পাওয়া পাবে। এর ফলে কৃষকরা অতিরিক্ত ফসল পাবেন। তাদের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে তা উপকারে আসবে। কর্মসংস্থান হবে, খাদ্য উৎপাদন বাড়বে এবং ভোজ্যতেল পাওয়া যাবে।
বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পের মুখ্য উদ্দেশ্য উপকূলীয় লবণাক্ত একফসলী এলাকায় অতিরিক্ত ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষকের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এই চাহিদা মেটাতে খুলনা অঞ্চলের ফাঁকা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করে দেশকে ভোজ্যতেলে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে দেওয়া সম্ভব।
এর আগে গবেষক ও অতিথিবৃন্দ বিনাচাষে সূর্যমুখী ও গম চাষাবাদের প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শন করেন।
তথ্যসুত্রঃ খুবি ফেসবুক পেইজ

প্রকাশ : মার্চ ১৫, ২০২১ ১:৫১ অপরাহ্ন
মালচিং ও জৈব প্রযুক্তি অনুসরণে খুবিতে বেগুনি ক্যাপসিকাম চাষে সাফল্য
কৃষি গবেষনা

বেগুনি ক্যাপসিকাম চাষে সাফল্য দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে এক নতুন সংযোজন যা বৈদেশিক রপ্তানিতে সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে। 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ গবেষণা কেন্দ্রে চলতি মৌসুমে মাঠ পর্যায়ে কম খরচে পোকা ও ভাইরাসমুক্ত নিরাপদ রঙিন ক্যাপসিকাম চাষের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে। মালচিং ও জৈব প্রযুক্তি অনুসরণে আশানুরূপ ফলন পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে একবার ফল তোলা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আবারও ফল ধরেছে। এই গবেষণা প্রকল্পের মাঠে এখন ক্যাপসিকাম গাছে বেগুনি, হলুদ ও সবুজ তিন ধরনের ফল শোভা যাচ্ছে। প্রতিটি গাছে ৪-১০টি পর্যন্ত ক্যাপসিকাম ঝুলে আছে। চলতি সপ্তাহেই দ্বিতীয় পর্যায়ের ফল সংগ্রহ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আকর্ষণীয় বেগুনি ক্যাপসিকাম দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে এবারই প্রথম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণা মাঠে চাষ করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহযোগিতায় এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। গবেষণার মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে থ্রিপস বাহিত ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করে ক্যাপসিকাম উৎপাদন। গবেষণার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রশান্ত কুমার দাশ। একই ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের ১ম বর্ষের ছাত্রী সাদিয়া আলম এ কাজের গবেষণা সহায়ক হিসাবে কাজ করছেন।

খুবিতে বেগুনি ক্যাপসিকাম
প্রধান গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক বলেন, “মাঠ পর্যায়ে ক্যাপসিকাম চাষের প্রধান অন্তরায় হল থ্রিপস পোকার আক্রমণ। এই থ্রিপস মরিচ গোত্রের সবজির জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। এই পোকা পাতার নীচে থাকে ও ঈযরখঈঠ ভাইরাসের বাহক হিসাবে কাজ করে। এই ভাইরাসের আক্রমণ হলে গাছের কচিপাতা হলুদ হয়ে কুকঁড়ে যায় ও স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এই ভাইরাস দ্বারা এটি ছড়ায় ও অতি অল্প সময়ে এটি সমস্ত মাঠে ছড়িয়ে পড়ার খুবই সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া ভাইরাস রোগের কোন প্রতিশোধক নেই ও ভাইরাস প্রতিরোধী ক্যাপসিকামের জাত বিশ্বে এখনো উদ্ভাবন হয়নি। কিন্তু আগাম সতর্কতা হিসাবে মাটি ও বীজ শোধন এবং পরিষ্কার চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। এছাড়া অল্পসংখ্যক গাছে রোগের লক্ষণ দেখা দিলে অতি অল্প সময়ের মধ্যে মাটিসহ গাছ তুলে ফেলে দূরে কোন গর্তে মাটি চাপা দিয়ে রাখতে হয়। মাঠ পর্যায়ে জৈব উপায়ে কার্যকরী থ্রিপস দমনের পদ্ধতি নির্বাচনই ছিল এই গবেষণার মূল লক্ষ্য। এই গবেষণায় থ্রিপস পোকা দমনের জন্য ক্যায়োলিন ক্লে ও নিমের তৈল জৈব বালাইনাশক হিসাবে ১০ দিন পর পর ছিটানো হয়। ক্যায়োলিন ক্লে, একটি অর্গানিক ক্লে পার্টিকেল যা এ্যালোমিনিয়াম ও সিলিকন সমৃদ্ধ। এই দ্রব্যের বাণিজ্যিক নাম সারাউন্ড। বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় এই ক্লে পাউডার ব্যবহার করেছেন – যেমন গাছের তাপ নিয়ন্ত্রণ, ফলকে সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা ও বিভিন্ন পোকা (থ্রিপস, মাইটস) দমন ইত্যাদি যেখানে বিজ্ঞানীরা খুবই ভালো ফল পেয়েছেন। যদিও বাংলাদেশের গবেষণায় ইতোপূর্বে এটি ব্যবহৃত হয়নি। এটি অর্গানিক পাউডার হওয়ায় বাণিজ্যিক চাহিদা ও খুব বেশি। এটি পানিতে দ্রবণীয় এবং সাধারণ ব্যাকপ্যাক স্প্রেয়ার দিয়ে ছিটানো যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন অনলাইন সোর্স ও সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিতে এই পাউডার পাওয়া যায়। এটি ছিটালে গাছ ও প্লাস্টিক মাল্চ পেপার সাদা হয়ে যায়। ক্যায়োলিন ক্লের সাদা রং সূর্য়ের তাপে প্রতিফলনের প্রভাব কাজে লাগিয়ে গাছকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া গাছের কান্ডে আলোর তীব্রতা বাড়ায় যা গাছের সালোক- সংশ্লেষণ বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া এ গবেষণায় নিমের তেলের ব্যবহার করা হয়েছে যার জৈব চাষ পদ্ধতিতে বাংলাদেশে বহুদিন ধরে ব্যবহারিত হয়ে আসছে। যেহেতু ক্যাপসিকামের সম্পূর্ণ অংশ খাওয়া হয় সেহেতু রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার না করলে সাধারণ মানুষ এই সবজিটি বেশি পছন্দ করে থাকে।” এ বিষয়টি মাথায় রেখেই মাঠ পর্যায়ে নতুন এই জৈব ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতির কথা চিন্তা করেন প্রধান গবেষক। এই মাঠে তিন রং এর (সবুজ, বেগুনি, ও হলুদ-বেগুনি) ক্যাপসিকাম গাছের বৃদ্ধি ও ফলনের তুলনামূলক গবেষণা চালানো হয়। বেগুনি রং এর ক্যাপসিকাম এই তিন রং এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফলন দেয়। যার বাজার মূল্য অন্যান্য সবজির চেয়ে অনেক বেশি (প্রতি কেজির দাম প্রায় ২৫০-৩০০ টাকা)।
বেগুনি রং এর ক্যাপসিকাম
গবেষক বলেন, “এই মাঠে একটি গাছে সর্বোচ্চ ২০-২৫ টি ফল হয় এবং একটি ফলের ওজন প্রায় ৮০-১৪০ গ্রাম যা মানসম্মত ওজন।” তিনি বলেন, “বাজারে সবুজ, লাল ও হলুদ ক্যাপসিকাম দেখা মিললেও বেগুনি রং এর ক্যাপসিকাম তেমন চোখে পড়েনা। এজন্য আর্কষণীয় রঙিন সবজি হিসাবে বাজারে এর প্রচুর চাহিদা আছে। ক্যাপসিকাম সাধারণত সালাদ, মিক্সিড সবজি ও চাইনিজ রান্নায় এর বহুবিধ ব্যবহার হয়। দাম বেশি হওয়ায় বেগুনি রং এর ক্যাপসিকাম চাষ করার জন্য দক্ষিণাঞ্চলের সবজি চাষিরা খুবই আগ্রহী হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। ” কিন্তু চাষিদেরকে সঠিক চাষ পদ্ধতি জানানো খুবই প্রয়োজন বলে গবেষক মনে করেন।
ড. প্রশান্ত কুমার দাশ বলেন, “ক্যাপসিকাম ঠান্ডা আবহাওয়া পছন্দ করে এই জন্য শীতকালে গাছের বৃদ্ধি, ফুলধারণ ও ফলন ভাল হয়ে থাকে। তিনি উল্লেখ করেন ক্যাপসিকামের জাত নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”  তিনি বীজ শোধন করে প্লাস্টিক সেল ট্রেতে কোকোডাস্টসহ চারা উৎপাদন করলে ভালো সতেজ চারা পাওয়া যাবে বলে আশা করেন। গবেষক বলেন,”৩মিটার দৈর্ঘ্যরে, ১ মিটার প্রস্থ ও ০.২ মিটার উচ্চতাসম্পন্ন বেড তৈরি করে ০.২৫ মিলিমিটার পূরত্বের উপরে সাদা ও নিচে কালো রং এর প্লাস্টিক মাল্চ বেডের উপরে ব্যবহার করলে গাছের সঠিক বৃদ্ধি ও পরিষ্কার চাষ পদ্ধতির নিশ্চয়তা দেওয়া যেতে পারে। ” রোপনের সময় সারি থেকে সারির দূরত্ব ০.৮ মিটার ও গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ০.৫ মিটার অনুসরণ করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন। প্লাস্টিক মালচ ব্যবহার করলে বহুবিধ উপকার পাওয়া যেতে পারে যেমন আগাছা দমন, মাটির সঠিক আর্দ্রতা বজায় রাখা ও গাছের ডগায় আলোর তীব্রতা বাড়ানো ইত্যাদি।
প্রধান গবেষক আশা করেন, “জৈব প্রযুক্তি অনুসরণ করে মাঠ পর্যায়ে বেগুনি রং এর ক্যাপসিকাম চাষ করলে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে এক নতুন সম্ভাবনা হতে পারে। এছাড়া চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান এবং পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণে অনেকাংশেই সক্ষম হবেন।” ভবিষ্যতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বেগুনি ক্যাপসিকাম জৈব সবজি হিসাবে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তথ্যসূত্রঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ফেইসবুক পেইজ।

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop