৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : অগাস্ট ১৪, ২০২৩ ১১:৩১ পূর্বাহ্ন
পুকুরে মাছ চাষের জন্য জৈব সার তৈরি করবেন যেভাবে
মৎস্য

খাদ্যের পাশাপাশি সারের খরচও চাষীদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাদের চাষের প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠ ভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে। কিন্তু তা অনেকটাই নিরাময় হয় যদি তারা তাদের চাষের পুকুরে ব্যবহার করে কিছু জৈব ও অজৈব সার।

এই সার মূলত পরিগণিত হয় সেই সমস্ত পূর্ব আলোচিত প্রাকৃতিক খাদ্যকনার খাদ্য দ্রব্য হিসাবে। তবে সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতি হওয়া উচিত – ‘কম মাত্রায় কিন্তু বেশি বার’ – এটা মেনে চলতে পারলে ভয় কম থাকবে।

এছাড়াও, বাধ্যতামুলক মাসে এক বার চুনের প্রয়োগ। আনুমানিক এক কাঠা পিছু এক কেজি – যা পরবর্তীতে একবার মেপে নিলে ভালো, পানির ‘pH’ যাচাই করে। যেহেতু পুকুরের পানি ও মাটির গুনাগুন, মূলত ‘pH’, মাছের বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে, ফলে, অন্তত ১৫ দিনে একবার পানির ‘ph’ দেখে নেওয়া অতি অবশ্যই প্রয়োজন।

জৈব সার তৈরি করার জন্য যে উপকরণগুলির প্রয়োজন হয় সেগুলি হল – গরুর গোবর, গোমূত্র, ঘরে রান্নার সবজির খোসা, চাল-ডাল ধোয়া পানি, সামান্য খোল ইত্যাদি বা কোনো সময় কুচো মাছ বা তাদের থেকে নির্গত বর্জ ইত্যাদি।

তবে, এদের মধ্যে, এই গোবর সারই আমাদের পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম-বাংলায় বহুল প্রচলিত। এই সারটি তৈরি করতেও বিশেষ তেমন খরচ নেই, শুধু রয়েছে একটি খুবই ছোট পুকুর বা পিট তৈরির পরিশ্রম।

এই পিটটির কিছুটা অংশ কাচা গোবর, কিছুটা পরিমাণ পানি এবং চাইলে সেই কুচো মাছ বা তাদের থেকে নির্গত বর্জগুলি দিয়ে ভরিয়ে দিয়ে খেয়াল রাখতে হবে যেন সেই যৌগটি তার অক্সিডেশন বা ফারমেণ্টেশানের (পচন) জন্যে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায়। এই পচন প্রক্রিয়ার ইতি হলেই গোবর সারের প্রস্তুত প্রণালী শেষ। এছাড়া জৈব জুসের মধ্যমেও অনুরূপ ফল পাওয়া যায়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ৩১, ২০২৩ ৯:২২ পূর্বাহ্ন
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপিত
মৎস্য

সিকৃবি প্রতিনিধি: সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উদযাপন করা হলো ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৩’। এ উপলক্ষ্যে ৩০ জুলাই বেলা সাড়ে বারোটায় বর্ণ্যাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডাঃ মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঞা। মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোঃ সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ড। ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডাঃ মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঞা “প্রোটিনের চাহিদা পূরণে অধিক হারে মৎস্য চাষ” করার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, “২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৭.৫৯ লক্ষ মে.টন মৎস্য উৎপাদিত হয়েছে। জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান ২.৪৩ শতাংশ। বিলুপ্ত ৪০ প্রজাতির দেশীয় মাছের প্রজনন কৌশল ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এছাড়া ৫০০টি অভয়াশ্রমের মাধ্যমে বিপন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে ইলিশ আহরনে প্রথম, অভ্যন্তরীন মুক্ত জলাশয়ে মাছ আহরনে তৃতীয় এবং তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে। ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ বিশ্বের ৫২টি দেশে মৎস ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করছে বাংলাদেশ।”

 

আলোচনার পরবর্তীতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন পুকুরে পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়। পোনা অবমুক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ, পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা), প্রক্টর, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সিকৃবি শাখার নেতাকর্মীরাসহ উচ্চপদস্থ শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ। উল্লেখ্য জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নিরাপদ মাছে ভরব দেশ, গড়ব স্মার্ট বাংলাদেশ’।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৭, ২০২৩ ৭:৩৫ অপরাহ্ন
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মৎস্য

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। জাতীয় অর্থনীতিতে, বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবার সমৃদ্ধ-স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য খাতের ভূমিকা হবে অনন্য-অসাধারণ। স্মার্ট ব্যবস্থা প্রয়োগের জন্য মৎস্য খাতে বিশাল সুযোগ রয়েছে। সমুদ্র থেকে শুরু করে উন্মুক্ত ও বদ্ধ জলাশয়ে মৎস্য খাতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।মাছের উৎপাদন, আহরণ, পরীক্ষা, বিপণন ও বহুমুখী ব্যবহারে স্মার্ট পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য খাত’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) এ কর্মশালা আয়োজন করে।

বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআই-এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মশিউর রহমান।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকবৃন্দ, মৎস্য চাষী ও উদ্যোক্তাগণ এবং মৎস্য খাতের অংশীজনরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় মন্ত্রী আরও জানান, মৎস্য খাত আজ আর গতানুগতিক কোন বিষয় নয়। মৎস্য খাতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপদ মাছ উৎপাদন করতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মাছের খাদ্য উপাদান, মাছ চাষের জন্য জলাশয়ের পানির উপাদান সব নিরাপদ রাখতে হবে। মৎস্য খাতের প্রতিটি পর্যায়ে স্মার্ট পদ্ধতি, যন্ত্রপাতি ও গবেষণার সমন্বয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। সেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য খাত কিভাবে ভূমিকা রাখবে, সেটা নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থা কাজ করছে।

মন্ত্রী বলেন, স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মাছের বহুমুখী ব্যবহার বাড়াতে হবে। মাছের গতানুগতিক ব্যবহারের বাইরে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে মৎস্যজাত বিভিন্ন খাবার তৈরি করতে হবে। মাছ থেকে পুডিং, বিস্কিট, চকলেট বা অন্য কোন সুস্বাদু খাবার তৈরি করলে সেটা নতুন প্রজন্ম সহজেই মৎস্যজাত খাবার গ্রহণ করবে।

তিনি আরও যোগ করেন, মৎস্য খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক কোটি ৯৫ লাখ মানুষ সম্পৃক্ত। মাছ উৎপাদন, আহরণ, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, রপ্তানিসহ মৎস্য খাতে এ মানুষরা কাজ করেন। এক সময় মাছ চাষে অনেকের অনাগ্রহ ছিল। এখন শিক্ষিত জনগোষ্ঠী মাছ চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানিতে সম্পৃক্ত হয়েছে। মৎস্য খাতকে বিকশিত করার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মাছ হবে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, মাছে-ভাতে বাঙালির কৃষ্টি বাঙালি জাতির বড় অংশ। এটি নষ্ট হয়ে গেলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে। খাবারের একটি বড় যোগান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে, উদ্যোক্তা তৈরি হবে না। মাছ রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বন্ধ হয়ে যাবে। মাছের প্রয়োজনীয়তা ও উপযোগিতা ব্যাপক। দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার ক্ষেত্রে, পুষ্টি চাহিদা পূরণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, উদ্যোক্তা তৈরিতে, বেকারত্ব দূর করতে, গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখতে সবক্ষেত্রে মৎস্য খাতের অবদান রয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেরা কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় আমরা বাংলাদেশের সমপরিমাণ সমুদ্রসীমা পেয়েছি। সেখানে সুনীল অর্থনীতির একটি বড় অংশ হবে প্রচলিত ও অপ্রচলিত মাছসহ অন্যান্য জলজ সম্পদ। এই সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের সংরক্ষণ, আহরণ ও উন্নয়নে স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। মাছ উৎপাদনে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সন্তুষ্ট থাকলেই হবে না বরং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মাছ উৎপাদনে উদ্বৃত্ত হতে হবে। একইসাথে উৎপাদিত মাছের মান নিশ্চিত করতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৬, ২০২৩ ৭:৫৯ অপরাহ্ন
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষ্য বর্ণাঢ্য নৌ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত
মৎস্য

নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি সরকারের লক্ষ্য – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য নৌ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার (২৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর হাতিরঝিলে এবারের জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। হাতিরঝিলের পুলিশ প্লাজা সংলগ্ন ঘাট থেকে শুরু হয়ে এফডিসি ঘাট পর্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম প্রধান অতিথি হিসেবে নৌ শোভাযাত্রায় যোগদান করেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ এবং নৌ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম নৌ শোভাযাত্রায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম ও এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ নৌ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও মৎস্যজীবীগণ ও মৎস্য খাতের বিভিন্ন অংশীজনরা বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে নৌ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।

শোভাযাত্রা শেষে সাংবাদিকদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, দেশের মৎস্য খাতকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা আমাদের লক্ষ্য। এজন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে উন্নত-সমৃদ্ধ মৎস্য খাত গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমরা ইলিশসহ অন্যান্য মাছ উৎপাদনে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। স্বাস্থ্যসম্মত মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছের বহুমুখী ব্যবহারের বাড়াতে হবে। মাছ রপ্তানি বৃদ্ধি করা গেলে মাছ দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ লক্ষ্য নিয়ে আমরা সামনে এগিয়ে যাচ্ছি।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে মাছ ধরা নিষিদ্ধকালে যাতে কেউ মাছ ধরতে না পারে, মাছ বেড়ে উঠতে যাতে কেউ অসহযোগিতা করতে না পারে, বিদেশি রপ্তানির সময় মাছে বিষাক্ত কোন উপাদান যাতে কেউ মেশাতে না পারে সেজন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

তিনি যোগ করেন, এবারের মৎস্য সপ্তাহের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও স্মার্ট মৎস্য খাত বিনির্মাণ করতে চাই। এক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৎস্যজীবী, মৎস্যজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন, নৌপুলিশ, নৌ বাহিনী, কোস্টগার্ড এমনকি গণমাধ্যম সম্মিলিতভাবে কাজ করছে।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, দেশে একসময় মাছের আকাল ছিল। এখন সেই বাংলাদেশে মাছে-ভাতে বাঙালির কৃষ্টি পরিপূর্ণ করেও ৫২ টি দেশে আমরা মাছ রপ্তানি করছি। মাছের গবেষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় ৩৯ প্রজাতির মাছ আমরা ফিরিয়ে এনেছি। দেশীয় মাছ সংরক্ষণে লাইভ জিন ব্যাংক করা হয়েছে যেখানে একশত প্রজাতির বেশি মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে। যে অঞ্চলে যে মাছ পাওয়া যাবে না সে অঞ্চলে জিন ব্যাংক থেকে মাছের পোনা নিয়ে অবমুক্ত করা হবে।

তিনি যোগ করেন, দেশের প্রান্তিক সীমা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত মাছের উৎপাদন, বিপণন, বহুমুখী ব্যবহার, মাছের রপ্তানি সব নিয়ে সরকার কাজ করছে। এসব কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করার প্রয়াসের একটি অংশ হিসেবে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে নৌ শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের কর্মসূচির মাধ্যমে মৎস্য খাতে যারা উৎপাদনে, বিপণনে প্রক্রয়াজাতকরণে, রপ্তানিতে সম্পৃক্ত তারা উৎসাহিত হবেন। শেখ হাসিনা সরকার তাদের পাশে আছে। মৎস্য খাত হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের এক বিস্ময়কর সাফল্য।

নৌ শোভাযাত্রায় ১৫ টি সুসজ্জিত নৌকা অংশগ্রহণ করে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৪, ২০২৩ ৬:২০ অপরাহ্ন
২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন
মৎস্য

২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

আজ সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী আরও জানান, ২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ লাখ মেট্রিক টন। যা বর্তমান উৎপাদনের চেয়ে ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি। উৎপাদিত মাছ যাতে মানব স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে। ২০২০ সালে মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ আইন করা হয়েছে। সমুদ্র সীমাসহ অন্যত্র যারা মাছ আহরণে সম্পৃক্ত তাদের প্রতিটি নৌযানে যান্ত্রিক পদ্ধতি সংযোজন করা হচ্ছে, যাতে তাদের মনিটরিং এর আওতায় রাখা যায়। পাশাপাশি কোনো মৎস্য নৌযান দুর্ঘটনায় পতিত হলে তাদের অবস্থান জানার জন্যও এই পদ্ধতি কাজে লাগানো হচ্ছে। এভাবে মৎস্য খাতে ডিজিটালাইজড পদ্ধতি যুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর ২৪ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এবারের কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট মৎস্য খাত গড়ে তোলা। স্মার্ট মৎস্য খাতে উৎপাদন, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানির প্রক্রিয়ায় স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য খাত থেকে সর্বোচ্চ অবদান রাখার লক্ষ্য নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাছ উৎপাদন এবং দেশে ও বিদেশে সরবরাহের জন্য সরকার দেশে আন্তর্জাতিকমানের পরীক্ষাগার তৈরি করেছে। পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমে বিদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী মাছ রপ্তানি করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিদেশ থেকে মাছের জন্য যেসব খাদ্য উপাদান আসে সেগুলোও এ পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাতে মাছ উৎপাদন, আহরণ ও বিপণনে অস্বাস্থ্যকর কোন উপাদান প্রবেশ করতে না পারে। শুধু মাছ উৎপাদন নয় বরং স্বাস্থ্যসম্মত ও খাবার উপযোগী নিরাপদ মাছ উৎপাদন সরকারের লক্ষ্য। আগে আমাদের লক্ষ্য ছিল মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি। এখন আমাদের লক্ষ্য দেশে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

মন্ত্রী বলেন, মাছ উৎপাদনে বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছের বহুমুখী ব্যবহারে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। মাছ থেকে চিপস, কেকসহ অন্যান্য মৎস্যজাত পণ্য তৈরি করলে মাছের ভোক্তাও বৃদ্ধি পাবে। এভাবে মাছের বহুমুখী ব্যবহার প্রক্রিয়াকে সরকার উৎসাহিত করছে। মাছের বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে যারা কাজ করতে চায় তাদের সহজ শর্তে, স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তাদের উৎসাহিত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ সরকার নানারকম সহায়তা প্রদান করছে।

তিনি বলেন, পৃথিবীর ৫২ টি দেশে বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে দেশের আয় হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মাছ রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, মাছের উৎপাদন, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিদেশে রপ্তানি সবকিছু মিলে দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের উন্নয়নে, মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে মাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি হলে খাবারের একটি বড় যোগান হয়।মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণ করে মাছ। যারা মাছ উৎপাদন করেন তাদের বেকারত্ব লাঘব হচ্ছে, তারা নিজেরাই উদ্যোক্তা হচ্ছেন। গ্রামাঞ্চলে মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে। মৎস্য খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এক কোটি ৯৫ লাখ মানুষ সম্পৃক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে।

মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে অভয়াশ্রম তৈরিসহ বিভিন্ন সময়ে সরকার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে উল্লেখ করে এ সময় মন্ত্রী আরও যোগ করেন, মাছ ধরা নিষিদ্ধকালে মৎস্যজীবীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকার প্রণোদনা প্রদান, খাদ্য সহায়তা, বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও উপকরণ সহায়তা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান একজন মৎস্যজীবীও যেন কষ্ট না পায়।

শ ম রেজাউল করিম আরও যোগ করেন, ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে শীর্ষস্থানে রয়েছে। মিঠা পানি ও বদ্ধ জলাশয়ের মাছ উৎপাদনেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ এখন তৃতীয়,বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের জলসীমায় প্রচলিত ও অপ্রচলিত মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার কাজ করছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা ৩৯ প্রজাতির দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় মাছ ফিরিয়ে এনেছে। দেশীয় মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য ময়মনসিংহে লাইভ জিন ব্যাংক করা হয়েছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে মুক্ত ও বদ্ধ জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্তকরণের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২৪, ২০২৩ ১২:০৯ অপরাহ্ন
জলজ প্রাণীর ওপর বৈশ্বিক উষ্মায়নের প্রভাব…
মৎস্য

বিশ্ব উষ্মায়ন হল ভূপৃষ্ঠ এবং বায়ুমণ্ডলের দীর্ঘকালীন উষ্মতা  বৃদ্ধি। গত ১০০ বছরে বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ০.৭৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির বেশিরভাগ অংশই ঘটেছে ১৯৭৫ সালের মধ্যে । তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য প্রধানত মানুষের কার্যকলাপের জন্য উৎপন্ন গ্রীনহউস-গ্যাসই দায়ী। মানুষের কিছু কার্যকলাপ যেমন, বৃক্ষ নিধন,শিল্পায়ণ এবং জীবাশ্ম জ্বালানীর দহনের ফলে এই গ্রীনহউস-গ্যাসের উৎপাদন বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ঘটনাটি পৃথিবীর বিভিন্ন্ স্থানকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে।

সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী 

এই শ্রেণীর প্রাণীদের ওপর উষ্মায়ন এর প্রভাব বর্তমানে খুবই বর্ধিত হয়েছে। এই প্রভাবগুলির ভিতর যেগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সরাসরি প্রভাবশালী সেগুলি হল – বাসস্থান হতে উৎখাত, তাপমাত্রা প্রদত্ত চাপ, খারাপ আবহাওয়ার সম্মুখিন হওয়া ইত্যাদি। সামুদ্রিক পানিতে ভাসমান প্ল্যাঙ্কটনগুলি হল সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের প্রধান খাদ্য। তাপমাত্রার পরিবর্তনের ফলে এই প্ল্যাঙ্কটনগুলির উৎপাদনের হার ও স্থানের প্রভূত পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে খাদ্যের অভাবও পরিযায়ী হওয়ার জন্য অনেকাংশে দায়ী। সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের শারীরিক বাবস্থাপনা সমুদ্রে বসবাসের উপযোগী। কিন্তু আবহাওয়ার পরিবর্তন তাদের এই স্বাভাবিক বাসভুমিকে বিপুল পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। এদের মধ্যে কিছু দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তনের সাথে তাল মেলাতে না পেরে অবলুপ্তির পথে পাড়ি দিয়েছে। এই সকল প্রাণীদের জীবনযাপনের জন্য নির্দিষ্ট একটা অনুকুল তাপমাত্রা পরিসরের প্রয়োজন। সমুদ্রের অতিরিক্ত তাপমাত্রা ( Global Warming ) তাদের এই সহ্য ক্ষমতাকে অতিক্রম করে যাছে। ফলে তারা অনেকেই স্বাভাবিক বাসস্থান পরিত্যাগে বাধ্য হয়ে পরিযায়ী প্রাণিতে পরিণত হয়। আর যদি কোনো প্রাণি পরিযান করার জন্য কোনো অনুকূল স্থান এর সন্ধান না পায় এবং বর্তমান বাসস্থান এর অতিরিক্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে না পারে তাহলে অবশেষে তারা অবলুপ্ত হয়।

 

প্লাঙ্কটন

উষ্মায়ন এর প্রভাবে , বৃষ্টিপাতের ধরণ পরিবর্তিত হতে থাকে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে, প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি-দ্রব্য সমুদ্রে প্রবেশ করে, ফলে ঋতু  ভিত্তিক প্লাঙ্কটন প্রাচুর্য তৈরি হয় ।

 

 ক্রাস্টাসিয়ান বা কবচি শ্রেণীর প্রাণী

উষ্মায়ন এর প্রভাবে সমুদ্রের জলে কার্বন ডাই অক্সিডের পরিমাণ বৃদ্ধি প্রাপ্ত  হয় । তার ফলে পি এইচ কমে, সমুদ্রের জলে প্রচুর পরিমানে আম্লীকরণ ঘটে। এই ঘটনাটি সমুদ্র-জলে থাকা  খোলক যুক্ত প্রাণীদের প্রচণ্ড পরিমানে ক্ষতিগ্রস্থ করে।  কবচি প্রাণীদের বহিরাবরণে আরাগোনাইট নামক পদার্থ থাকে, যা সমুদ্রের আম্লিক পানিতে দ্রবীভূত হয়ে পরে। ফলে এই কবচি শ্রেণীর প্রাণীদের অবলুপ্তি ঘটে যা সমুদ্রের সমগ্র বাস্তুতন্ত্রকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। আরও একটি ঘটনা লক্ষ্য করা হয়, কবচি শ্রেণির প্রানীদের মধ্যে যারা ফাইটোপ্লাঙ্কটনদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে যেমন ক্রিল তারা ৮০% এর কাছাকাছি অবলুপ্ত হয়েছে বিগত ৩০ বছরে। উষ্মায়ন এর প্রভাবে বরফ চাদর গলিত হয়, ফলে সামুদ্রিক শৈবাল ও ক্রিল অবলুপ্ত হয় । তাদের অবলুপ্তির ফলে বহু সামুদ্রিক প্রাণীদের মৃত্যু ঘটে, যারা তাদের পুষ্টির উৎস হিসেবে ব্যবহার করে।

প্রবাল প্রাচীর

প্রবাল প্রাচীর সামুদ্রিক পরিবেশে খুবই জরুরি, কারণ এখানে কার্বনচক্র সংঘটিত হয় । এটি এমন একটি স্থান যেখানে জলজ প্রাণিদের সমাগম ঘটে, বংশ-বিস্তারের জন্য অথবা খাবার সংগ্রহ করার জন্য।ফলে এদের অবলুপ্তির ফলে একটি সম্পূর্ণ খাদ্য-চক্রের বিনাশ ঘটে।  প্রবাল দীর্ঘদিন ধরে বৃদ্ধি পেতে থাকে,কারণ বাইরের প্রভাবের কারণে এগুলো বিনষ্ট হয় না। কিন্তু তাপমাত্রার পরিবর্তন  প্রবাল প্রাচীরকে বিনষ্ট করতে পারে। মৃত প্রবাল আবার বৃদ্ধি প্রাপ্ত হতে পারে না। প্রবাল প্রাচীর এর অবলুপ্তি শুধু মাত্র সমুদ্রে জীব- বৈচিত্র্যের ক্ষতি করে তাই না ,তার সাথে বায়ুমণ্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ কম করে। ফলে পরোক্ষভাবে উষ্মায়নে সাহায্য করে।

মাছ

পানির তাপমাত্রা মাছের বংশ-বিস্তারে সাহায্য করে এবং সঠিক জলজ পরিবেশ স্থাপণে সাহায্য করে। বড় মাছের থেকেও লার্ভা ও জুভেনাইল স্তরের মাছ কে বেশি পরিমানে প্রভাবিত করে।

 

উপরের আলোচনা থেকে এটা পরিষ্কার যে জলবায়ুর পরিবর্তন তথা বিশ্ব উষ্ণায়ন জলজ প্রাণীদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এই প্রভাব শুধুমাত্র তাদের উপরে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং সমগ্র পরিবেশ‌ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মানুষের দৈনন্দিন খাবারের একটা বড় অংশ যেহেতু জলজ প্রাণীদের থেকে আসে তাই সমগ্র মানবজাতিও এর প্রভাব থেকে নিস্তার পাবে না । পরিবেশ দূষণ যদি কমানো না যায় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে সমগ্র মানবজাতিকেই হয়তো বিলুপ্তির পথ দেখতে হতে পারে ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ৬, ২০২৩ ৭:০৯ অপরাহ্ন
উদ্ভোধন হলো সংসদ ভবনে মাছ ধরার কার্যক্রম
মৎস্য

জাতীয় সংসদ লেকে সৌখিন মৎস্য শিকারীদের জন্য বড়শি দিয়ে মাছ-ধরা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার সকালে লেকের ১৯ ও ২০ নম্বর ফিশিং পয়েন্টে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাব।

জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবের সভাপতি নূর-ই-আলম চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

এসময় একাদশ জাতীয় সংসদের রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম, খাদিজাতুল আনোয়ার এমপি ও আদিবা আনজুম মিতা এমপি উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তি, বড়শি দিয়ে মাছ শিকারী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৬, ২০২৩ ১১:৪৮ অপরাহ্ন
নওগাঁয় মাছ চাষে বিপ্লব
মৎস্য

স্থানীয় মৎস্য অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে, গত অর্থবছরে নওগাঁয় ৮৩ হাজার ৮৬১ টন, এর মধ্য থেকে ১২২ টন মাছ বিদেশে রফতানি করেছে ৩ প্রতিষ্ঠান। ৭ নদী, ১২৩ বিল জলাশয় ও ৪৮ হাজার পুকুরে নিবন্ধিত এ জেলার মাছ চাষি ৫২ হাজার। জেলায় বার্ষিক মাছের চাহিদা ৬১ হাজার টন কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে ৮৩ হাজার টন। দৈনিক মাথাপিছু ৬০ গ্রাম মাছের চাহিদা হিসাবে মাছের উদ্বৃত্ত উৎপাদন ২২ হাজার ৮৭৮ টন। যেখানে আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬৩ হাজার টন।

বার্ষিক চাহিদার ২০ হাজার টন বেশি মাছ উৎপাদন হচ্ছে। তবে মাছের খাবারের দর দফায় দফায় বৃদ্ধি মাছ চাষিদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। বিদেশে মাছ রফতানির সুযোগ সৃষ্টি ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানোর দাবি উদ্যোক্তাদের। রুক্ষ বরেন্দ্রভূমি নওগাঁর নিয়ামতপুরের কয়েকটি পুকুরে মাছ চাষিরা জানান, বরেন্দ্রভূমিতে গত দেড় দশকে মাছ চাষে এসেছে অভাবনীয় সাফল্য। লাভজনক হওয়ায় মাছ চাষের কারবারে এগিয়ে এসেছেন অনেক শিক্ষিত বেকার তরুণরাও।

স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন বোনা এসব উদ্যোক্তা পুকুরে চাষ করছেন দ্রুত বর্ধনশীল রুই, কাতল মৃগেল তেলা পিয়া, পাঙাশ দেশীয় হারিয়ে যাওয়া অনেক প্রজাতির মাছ। আর চাষ করা এসব জীবন্ত মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে গত কয়েক মাস ধরে মাছের ফিডের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধিতে চিন্তায় ফেলেছে মাছ চাষি উদ্যোক্তাদের। মাছ চাষি সাদ্দাম হোসেন বলেন, গত দু’বছর ভালো লাভ হলেও এখন ফিডের দাম বেশিতে লাভ কম হচ্ছে।

এদিকে পুকুর থেকে তোলা মাছ আড়তে বেচতে এসে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের জালে দরবঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি নানা হয়রানির শিকার মাছ চাষিরা। নিয়ামতপুরের মাছ চাষি দুরুল ইসলাম জানান, আড়তে ৫০ কেজিতে মণ নেয়া ও সিন্ডিকেট করে দাম কমানোয় তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। উন্মুক্ত জলাশয় ও পুকুরে মাছ চাষ বাড়াতে আধুনিক কলাকৌশল প্রদানসহ উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোগিতার কথা জানায় মৎস্য বিভাগ।

জেলায় নিবন্ধিত মৎস্যজীবীর সংখ্যা ১৭ হাজার ৭৫১ জন, সর্বমোট মৎস্য চাষির সংখ্যা ৩৩ হাজার ২৭৬ জন। জেলায় ৫টি সরকারি মৎস্য হ্যাচারি ও ২৮টি বেসরকারি মৎস্য হ্যাচারি রয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৩, ২০২৩ ১০:০৩ পূর্বাহ্ন
২০ এপ্রিল থেকে মাছ ধরা নিষিদ্ধ কাপ্তাই হ্রদে
মৎস্য

হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় এবং কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে আগামী ২০ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে হ্রদে সকল প্রকার মাছ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।

সোমবার (১০ এপ্রিল) রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জরুরী সভায় সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অংশ নেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের রাঙ্গামাটি জেলার ব্যবস্থাপকসহ জেলার মাছ ব্যবসায়ীরা।

মৎস্য সম্পদ রক্ষায় অবৈধভাবে মাছ শিকার বন্ধে হ্রদ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে বলেও জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১০, ২০২৩ ১১:১৩ পূর্বাহ্ন
গবেষণায় ফিরে এলো বিলুপ্তপ্রায় জারুয়া মাছ
বিজ্ঞান ও গবেষণা

একের পর এক সফলতা অর্জন করে চলেছেন, নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি উপকেন্দ্র সৈয়দপুরের বিজ্ঞানীরা। গুতুম, টেংরাসহ অন্যান্য বিলুপ্ত মাছের পোনা উত্পাদনের পর এবার জারুয়া মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উত্পাদনে সফলতা দেখিয়েছেন তারা।

কেন্দ্রের একদল বিজ্ঞানী এই মাছটি রক্ষায় ২০১৮ সাল থেকে নিবিড়ভাবে গবেষণা শুরু করেন। অবশেষে সেই সফলতা আসে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। জারুয়া মাছের এ গবেষণা সফলতার ফলে ব্যক্তি মালিকাধীন ও সরকারি মত্স্য হ্যচারিসমূহে জারুয়া মাছের পোনা প্রাপ্তি সহজতর হবে বলে ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে। কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আজহার আলীর নেতৃত্বে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালিহা হোসেন, ইশতিয়াক হায়দার, শ্রীবাস কুমার সাহা, তাশরিফ মাহমুদ মিনহাজ এই গবেষণায় অংশ নেন।

জারুয়া মাছ মূলত বাংলাদেশের মিঠাপানির একটি মাছ। মাছটির (বৈজ্ঞানিক নাম Chagunius chagunio)। দেশের উত্তর জনপদে মাছটি উত্তি নামে পরিচিত। মিঠাপানির জলাশয় বিশেষ করে পাথুরে তলদেশ ও অগভীর স্বচ্ছ নদীতে এদের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মাছটি সুস্বাদু, মানবদেহের জন্য উপকারী অণুপুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ এবং উত্তরাঞ্চলে খুবই জনপ্রিয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একসময় মাছটির প্রাচুর্য ছিল। মাছটির উত্তর জনপদে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু জলাশয় দূষণ অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, নদীতে বানা ও কারেন্ট জালের ব্যবহার এবং চৈত্র মাসে জলাশয় শুকিয়ে মাছ ধরা নানাবিধ কারণে বাসস্থান ও প্রজননক্ষেত্র বিনষ্ট হওয়ায় এ মাছের প্রাচুর্যও ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রজাতিটিকে বিপন্নের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের দীর্ঘ পাঁচ বছর গবেষণা চালিয়ে প্রথম বারের মতো কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উত্পাদনের কলাকৌশল উদ্ভাবনে সফলতা লাভ করেছে।

ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, জারুয়া মাছের প্রধান প্রজননকাল জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রজনন মৌসুমের এক-দুই মাস আগেই নদনদী, বিল, হ্রদ ইত্যাদি থেকে সুস্থ-সবল ও রোগমুক্ত ১০০-১৫০ গ্রাম ওজনের জারুয়া মাছ সংগ্রহ করে পূর্ব প্রস্তুতকৃত পুকুরে শতাংশে ১৫০টির সঙ্গে দুটি কাতলা, দুটি সিলভার কার্প, তিনটি রুই এবং তিনটি রাজপুঁটি মজুত করে এক-দুই মাস প্রতিপালন করে প্রজনন উপযোগী ব্রড মাছ তৈরি করা যায়।

মজুতকৃত মাছগুলোকে প্রতিদিন দেহ ওজনের ৫-৩ শতাংশ হারে ৩০ শতাংশ প্রোটিনসমৃদ্ধ সম্পূরক খাবার সরবরাহ করতে হবে। নিয়মিত পানির গুণাগুণ যেমন তাপমাত্রা, পিএইচ, দ্রবীভূত অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া ও মোট ক্ষারত্বের পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মজুতের পর থেকে প্রতি ১৫ দিন পরপর জাল টেনে মাছের দেহের বৃদ্ধি ও পরিপক্বতা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য পুকুরে এয়ারেটর ব্রড স্থাপন করা যেতে পারে।

একটি পরিপক্ব মা-মাছ থেকে বয়স ও ওজনভেদে প্রতি ১০০ গ্রাম দৈহিক ওজনের জন্য ১২ হাজার থেকে ২২ হাজার ১৭৫টি ডিম পাওয়া যায়। মাছটি প্রায় ৫০ সেমি এবং ২৫০-৩০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে তবে অঞ্চলভেদে ১৫০-২০০ গ্রাম থেকেই স্ত্রী মাছ প্রজননক্ষম হতে শুরু করে।

সিস্টার্নে স্থাপনকৃত হাপায় প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নিশ্চিত করতে কৃত্রিম ঝরনা ব্যবহার করা হয়। প্রজননের জন্য জারুয়া মাছের স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে কৃত্রিম হরমোন ওভোহোম দ্রবণ বক্ষ পাখনার নিচে ইনজেকশন হিসেবে প্রয়োগ করা হয়। জারুয়া মাছের কৃত্রিম প্রজননে একক মাত্রার হরমোন ইনজেকশন প্রতি কেজি পুরুষ মাছকে ০.৫ মি.লি. হারে এবং স্ত্রী মাছকে ২.০ মি.লি. হারে প্রয়োগ করা হয়।

হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগের ১৮-২০ ঘণ্টা পর স্ত্রী মাছকে চাপ প্রয়োগ করে ডিম বের করা হয় এবং পুরুষ মাছের স্পার্ম বের করে ০ দশমিক ৯ শতাংশ লবণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করা হয়। উক্ত দ্রবণ ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে পাখির পালক দিয়ে দুই-তিন মিনিট নাড়ানো হয় এবং ফ্রেশ পানি দিয়ে ধুয়ে ট্রেতে কৃত্রিম ঝরনায় স্থানান্তর করা হয়। ডিম ছাড়ার ৮০-১০৪ ঘণ্টা পর ডিম থেকে রেণু বের হয়। রেণু বের হওয়ার ৭২ ঘণ্টা পর থেকে রেণুকে খাবার দিতে হবে। রেণু পোনাকে সিদ্ধ ডিমের কুসুমের দ্রবণ দিনে ছয় ঘণ্টা পরপর চার বার দিতে হবে। হাপাতে রেণু পোনাকে এভাবে সপ্তাহব্যাপী রাখার পর নার্সারিতে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ছোট পুকুর (১-৫ শতক) নার্সারি হিসাবে ব্যবহার করা যায় এবং সঠিক পরিচর্যায় ৫০-৬০ দিনের মধ্যে আঙুলি পোনায় পরিণত হয়।

কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আজহার আলী জানান, ‘বিলুপ্তপ্রায় এই মাছটি খানসামার জয়গঞ্জ এলাকার আত্রাই নদী থেকে সংগ্রহ করা হয়। এরপর দীর্ঘ গবেষণার পর কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উত্পাদনে সফলতা আসে। আমরা প্রযুক্তি হেড অফিসে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে মত্স্য বিভাগের মাধ্যমে চাষি পর্যায়ে যাবে জারুয়া মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উত্পাদনের কৌশল।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, দেশের মত্স্য উত্পাদনে দেশীয় ছোট মাছের অবদান ৩০-৩৫ শতাংশ। দেশীয় মাছের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের মানুষ এর সুফল পাচ্ছে। জারুয়া মাছের কৃত্রিম প্রজননে সফলতা এর নতুন সংযোজন। মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণা কার্যক্রম সাম্প্রতিক কালে জোরদার করা হয়েছে এবং দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে গবেষণা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব দেশীয় মাছকে পুনরুদ্ধার করার জন্য স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।’

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop