১২:৪৭ অপরাহ্ন

শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২২ ১২:০৫ অপরাহ্ন
দিনাজপুরে গোখাদ্য হিসেবে বিক্রি হচ্ছে অপরিপক্ক গম গাছ
কৃষি গবেষনা

দেশে বাজারে গমের চাহিদা বাড়লেও কমে গেছে আবাদ। দিনাজপুরে গো খাদ্য হিসেবে অপরিপক্ক গম গাছ কেটে ফেলে সৃষ্টি করা হচ্ছে নতুন সংকট। ঘাসের পরিবর্তে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এসব গাছ। দিনাজপুরে ব্যাপক হারে এ প্রবণতা শুরু হওয়ায় দেশে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।

কৃষিনির্ভর জেলা দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে গমের চাষ হয়। সবুজে ছাওয়া এসব ক্ষেতের গাছে এরইমধ্যে কচি গম বেরিয়ে এসেছে। এক মাস পরই ক্ষেত থেকে গম তোলার কথা। কিন্তু বিভিন্নস্থানে গম পরিপক্ক হওয়ার আগেই গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে গবাদিপশুর খাবার হিসেবে।

কৃষকরা জানান, গম বিক্রি করে তারা যে আয় করেন তার থেকে গাছের ঘাস বিক্রি করে এর থেকে বেশি উপার্জন করেন তারা।

দিনাজপুর জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবাদ হয়েছে মাত্র সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এমনিতেই গমের উৎপাদন কম, তারওপর গবাদিপশুর ঘাস হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় সার্বিক খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এটি হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে খাদ্য বিভাগ।

বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষনা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুধু দিনাজপুর নয়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের মধ্যে এ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে ফলন আরও হ্রাস পেতে পারে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে কৃষি বিভাগকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মনজুরুল হক বলেন, লাভের আশায় কৃষকরা গম কেটে গরু কে খাওয়ার জন্য ঘাস হিসেবে বিক্রি করে দিচ্ছে। এজন্য আমরা বড় পরিকল্পনায় নিয়েছি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যেক উপজেলায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

দেশে বছরে গমের চাহিদা ৭৫ লাখ টন। কিন্তু বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১২ লাখ টন। প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে গমের চাহিদা বাড়ছে। তাই দেশের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে গম আমদানি করতে হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২২ ৯:৪৪ অপরাহ্ন
খুবিতে পরিবেশ বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন
কৃষি গবেষনা

বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ইস্যুকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে : মন্ত্রী

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে পরিবেশ বিষয়ক দু’দিনব্যাপী প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড ইকোসিস্টেম রেস্টোরেশন’। আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সকাল ৯টায় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তবে বাংলাদেশ পরিবেশের ক্ষতি না করেও আজ প্রথম সারির ভুক্তভোগী দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে। এজন্য বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ইস্যুকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ বিষয়ে ন্যাশনাল এডাপটেশন প্লান তৈরি করা হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রিসার্চ এবং নলেজ ম্যানেজমেন্টকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজ জলবায়ু ইস্যুতে বিশ্বের সোচ্চার দেশ প্রধানদের মধ্যে অন্যতম। তিনি এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করছেন। জাতিসংঘের স্বীকৃতিও পেয়েছেন। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌগলিক অবস্থানজনিত কারণে এখানে গবেষণার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। এই সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবেশের যে ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে বিশ্ব কতটা চিন্তিত সেটা বুঝতেই এই সম্মেলন।

তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩-১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবেশ বিষয়ে বিভিন্ন আইন করে গেছেন। তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কারণে তিনি এ বিষয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পুরস্কার পেয়েছেন। এ থেকেই আমরা বুঝতে পারি পরিবেশ নিয়ে ভাবনা এখন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের।

উপমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের ১৯৭টি দেশ সবাই এখন বিশ্বাস করে আমাদের পরিবেশ ও প্রতিবেশ ঠিক রাখতে হবে। গত বছর অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনেও পরিবেশের নানা দিক স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশই চায় সুন্দর পরিবেশ ধরে রাখতে। তবে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলো পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। তাদের বিষয়ে সবাইকে ভাবতে হবে।

তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে পরিবেশ বিষয়ক প্রথম এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বার্তা যে, আমাদের পরিবেশ নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। সকলের গবেষণায় এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এসব দুর্যোগের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতি হচ্ছে, আয়তন কমে আসছে। প্রতিবছর ২-৪টি দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন উপকূলীয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। সুন্দরবন না থাকলে এ উপকূলে মানব বসতি ও জীবনযাপন সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে ভাবতে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসতে হবে। সকলের চিন্তা-ভাবনায় আমাদের দেশ বিশ্বে আরও ভাল অবস্থান তৈরি করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ও সম্মেলনের চিফ প্যাট্রন প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে তা ভবিষ্যতে মানবজাতি ও সভ্যতার জন্য হুমকী স্বরুপ। তিনি বলেন এই সম্মেলনটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সম্মেলনে শুধু দেশের জন্যই নয় আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত নিয়েও আলোচনা হবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান উপকূলীয় এলাকায় হওয়ায় পরিবেশ ও প্রতিবেশ নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণা করা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সে দায়িত্ববোধ থেকেই এমন সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্লিনারি স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত। প্যাট্রন হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা এবং জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের অরগানাইজিং সেক্রেটারি সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সম্মেলনের অরগানাইজিং কমিটির কনভেনর প্রফেসর ড. দিলীপ কুমার দত্ত। এর আগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলন শুরু হয়। এরপর অতিথিবৃন্দ এবং বিদেশি ডেলিগেটদের ফুল ও উত্তরীয় দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সম্মেলনের বিষয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার। এসময় ভাইস-চ্যান্সেলর ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে খ্যাতনামা পরিবেশবিদ প্রফেসর ড. আলী রেজা খান ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইডেনসহ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী সশরীরে এবং ভার্চুয়ালি এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে ৬টি কি-নোট পেপার এবং ১২৫টি গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ সম্মেলনে ৬০ জন তরুণ গবেষকের গবেষণা নিবন্ধও উপস্থাপিত হবে।

উৎসঃখুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ফেসবুক পেজ

মোঃ আমিনুল খান

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১, ২০২২ ৩:৫২ অপরাহ্ন
রাঙামাটিতে সোর্সোপ চাষে সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে
কৃষি গবেষনা

বিদেশি ফল সোর্সোপ। যার বৈজ্ঞানিক নাম অনারা মুরিকাটা। দেখতে অনেকটা আতার মতো। স্বাদে কিছুটা টক। তাই স্থানীয়দের কাছে এটি টক আতা হিসেবে পরিচিত। কাঁচা অবস্থায় সবুজ। পাকলেও পরির্বতন হয় না রঙ। তবে আতার চেয়ে আকারে বড়। ডিম্বাকৃতির, কিছুটা চ্যাপ্টাও। দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, স্বাদেও তেমন মজাদার। রসালো এ ফলের গন্ধও অতুলনীয়। তাই এর নাম সোর্সোপ।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা বলছেন, এই সোর্সোপ কৃষিতে সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে রাঙামাটিতে।

রাঙামাটি কাপ্তাই রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫ বছর সময় লেগেছে গবেষণা করে বিদেশি এ ফল সোর্সোপ উদ্ভাবন করতে। এটা বাংলাদেশে প্রথম। শুধুমাত্র রাঙামাটিতে সোর্সোপ ফল চাষে সফলতা এসেছে।

এ ব্যাপারে রাঙামাটি কাপ্তাই উপজেলা রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলতাফ হোসেন বলেন, ২০১৭ সালে ভিয়েতনাম থেকে সোর্সোপ ফলের চারাগাছ চারা সংগ্রহ করা হয়। এপর শুরু হয় গবেষণা। মোট ৩০টি গাছে কাপ্তাই রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে বোপন করা হয়। ২০১৯ সালে সে গাছে ফল ও ফল আসে। প্রথমে সবগুলো গাছে ফল আসেনি কিন্তু ২০২০ সালে সব গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করেছে। ২০২২সালেও বেশ ভাল ফলন পাওয়া যায়। তাই বলা যায় এ গাছের উপর গভেষণা করে আমরা সফল হয়েছি। পার্বত্যাঞ্চলের মাটি এ গাছের জন্য খুবই উপযোগী। গবেষণা ৪ জন সদস্য নিয়ে আমরা টিম গঠন করি। সবই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। জাতীয় জীব বোর্ডে সোর্সোপ নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। নিবন্ধন হয়ে গেলে এ সোর্সোপ ফল গাছ কৃষকদের মাঝে চাষাবাদের জন্য ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট তথ্য সূত্রে জানা গেছে, এটি একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় গাছ যা সর্বোচ্চ দশ মিটার উচ্চতায় পৌঁছতে পারে। সাধারণ সাধারণত ৬ থেকে ৮ মিটারের পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রথম ফল আনতে সময় লাগবে ১৬ থেকে ২৫ মাস পর্যন্ত। স্বাদ টক জাতীয়। তবে পারিপক্ক হলে খুবই মিষ্টি। আমেরিকা, আফ্রিকার, ইউরোপে ও স্পেনে এ সোর্সোপ ব্যাপক চাষাবাদ হয়ে থাকে। এ ফলের ব্যাপক ঔষধী গুণাগুণ রয়েছে। বিশেষ করে হৃৎপিণ্ডের জন্য খুই উপকারী। এছাড়া এটি হজমশক্তি এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৩, ২০২২ ৩:২৭ অপরাহ্ন
দার্জিলিংয়ের কমলা চাষে সাফল্য, মাসে আয় লাখ টাকা
কৃষি গবেষনা

নীলফামারীতে ভারতের দার্জিলিংয়ের সাদকি জাতের কমলা চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন নার্সারি মালিক লেবু মিয়া। তার বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে থোকায় থোকায় পাকা কমলা। এসব কমলা রসালো ও সুমিষ্ট। দার্জিলিংয়ে সাদকি জাতের কমলার বাণিজ্যিক চাষ হয়। আর পাহাড়ি এই কমলার সেখান থেকে চারা এনে নীলফামারীর সমতল ভূমিতে এখন চাষ হচ্ছে।

জেলা সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের কচুকাটা উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে রয়েছে এ আর লেবু মিয়ার ‘এ আর মামুন নার্সারি’। ওই নার্সারির একটি অংশে ২০১৩ সালে দার্জিলিং থেকে দুটি সাদকি জাতের কমলার চারা এনে রোপণ করেন তিনি। পর্যায়ক্রমে সেখান থেকে চারার সংখ্যা বাড়িয়ে এখন গাছ থেকে পেতে শুরু করেছেন ফল। শুরু করেছিলেন ৬০টি গাছ দিয়ে। সফল হওয়ায় নার্সারির আরেক অংশে নতুন করে রোপণ করেছেন আরও ৬০০ চারা। বর্তমানে তার নার্সারিতে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৩০ হাজার সাদকির চারা।

লেবু মিয়ার বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে পাকা কমলা। তিন থেকে সাড়ে তিন বছরের একটি গাছে কমলা ধরেছে অনন্ত ৪০ কেজি। যা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাগানেই। এছাড়া ৬০০টি কমলার চারা রাখা হয়েছে ৪ বিঘা এলাকাজুড়ে। শুধু সাদকি কমলাই নয়; লেবু মিয়ার নার্সারির চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে চায়না কমলা, সাউথ আফ্রিকান মাল্টা, ভিয়েতনাম মাল্টা, বারি মাল্টা, লিচু, আম, বরই, কাজুবাদাম, বারোমাসি আমলকি, ত্বিনফল, চেরিফল, আপেলসহ বিভিন্ন ফলের গাছ।

নার্সারির মালিক লেবু মিয়া জানান, একসময় অর্থাভাবে বড় ছেলেকে পড়ালেখা করাতে পারিনি। বিষয়টি তাকে ভীষণ কষ্ট দিয়েছে। পরে তিনি উদ্যোগী হন নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে। ২০০১ সালে কচুকাটা উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে এক বিঘা জমি চুক্তিতে নিয়ে শুরু করেন নার্সারি ব্যবসা। দিনে দিনে তার নার্সারির প্রসার ঘটতে থাকে। বর্তমানে সাড়ে ১৩ বিঘা জমি কিনে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘এ আর মামুন নার্সারি’।

তিনি আরও জানান, নার্সারিতে এখন নিয়মিত কাজ করছেন ২৫ জন শ্রমিক। সব খরচ বাদ দিয়ে এই নার্সারি থেকে বছরে তার লাভ ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। এই নার্সারিতেই কাজ করেন লেখাপড়া করাতে না পারা তার বড় ছেলে এ আর হারুন। মেজো ছেলে এ আর মামুন এমএ পড়ার পাশাপাশি নার্সারিতে বাবাকে সহায়তা করেন। আর একমাত্র মেয়ে মাহমুদা আক্তার লিহা উচ্চমাধ্যমিক পাস করে এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন মেডিকেল কলেজে ভর্তির।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, এ জেলার মাটি লেবুজাতীয় ফল চাষের জন্য উপযোগী। এখানে আবহাওয়া ও মাটি অনুকূলে থাকায় প্রচুর কমলার চাষ হচ্ছে। জেলা সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের মামুন নার্সারি দার্জিলিংয়ের সাদকি জাতের কমলা চাষে সফল হয়েছেন।

তিনি বলেন, সম্ভাবনাময় সাদকি কমলার চাষ বাণিজ্যিকভাবে ছড়িয়ে দিতে পারলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন আমাদের কৃষকরা। অন্যদিকে পুষ্টি চাহিদা পূরণেও এ ফল ভূমিকা রাখবে।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নীলফামারী জেলার চিলাহাটিতে আব্দুল্লাহ, সোনারায়ে রিয়াসাত, পঞ্চপুকুরে মনিরুজ্জামান বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির কমলা চাষ করছেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২, ২০২২ ৩:৫৫ অপরাহ্ন
যে ১৪টি রোগ সারাতে পারে আলু!
কৃষি গবেষনা

আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট ও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আলু ছাড়া চলেই না কারো। তবুও কারণে অকারণে আমরা খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছি আলু। অথচ এই আলুতে আছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ। আলুর সাথে যায় না এমন তরকারি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। যদিও আলুতে বাড়ে দেহের ওজন তথাপি পরিমিত পরিমাণে আলু খাদ্যতালিকায় থাকলে তা শরীরের জন্য ভালো।

বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, আলু ১৪টি রোগ সারাতে সহায়তা করে।

আসুন জেনে নিই আলু কি কি রোগ সারাতে পারে:
১. আলুতে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম সঠিক পরিমাণে থাকে। তাই, আলু রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
২. আলুতে আছে ফাইবার, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি ৬। যা কিনা কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ করে হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৩. ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবেও আলু কাজ করে। আলুতে থাকা ফোলেট যা ডি.এন.এ. তৈরি ও মেরামত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও আলুতে থাকা ফাইবার কোলন ক্যান্সারের থেকে মুক্তি দিতে পারে।
৪. আলুতে থাকে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক। যা শরীরের গঠন মজবুত করে ও হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
৫. আলুতে আছে ফাইবার যা কিনা শরীরের হজমক্ষমতা বাড়িয়ে পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা সচল রাখে।
৬. আলু কিডনিতে স্টোন হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
৭. দাঁত বা মাড়ির সমস্যা দূর করতেও সহায়তা করে আলু।
৮. পেটের নানারকম সমস্যায় আলু সেদ্ধ খেলে বেশ উপকারিতা পাওয়া যায়।
৯. আলুতে থাকা ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ইলেক্ট্রোলাইসিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
১০. আলুতে আছে কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম ও গ্লুকোজ যা কিনা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
১১. আলুতে থাকা ভিটামিন এ ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
১২. আলুতে থাকে সঠিক পরিমাণে প্রাকৃতিক মিষ্টি পদার্থ, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা মাসিকের সময়ে মেজাজ খিটখিটে হওয়া থেকে মুক্তি দেয়। এছাড়াও, এই সময় আলু খেলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়।
১৩. অনিদ্রা বা কম ঘুমের সমস্যা থাকলে আলু খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
১৪.আলুতে কম পরিমাণে ফ্যাট এবং বেশি পরিমানে ফাইবার থাকে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আলু একেবারে বাদ না দিয়ে খাদ্য তালিকায় অল্প পরিমাণ আলু রাখলে ওজন দ্রুত কমে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৩০, ২০২১ ৪:১২ অপরাহ্ন
রাজশাহীতে নূরের নতুন জাতের চিকন ধান
কৃষি গবেষনা

কৃষি গবেষণায়, কৃষক পর্যায়ে নিরলসভাবে কাজ করছেন রাজশাহীর তানোরের গোল্লাপাড়ার কৃষক নূর মোহাম্মদ। তার এবারের নতুন উদ্ভাবন দেশের সবচাইতে চিকন উচ্চ ফলনশীল ধান। গত ছয় বছরের গবেষণায় এই নতুন ধান উদ্ভাবন করেছেন কৃষক নূর মোহাম্মদ। নাম দেওয়া হয়েছে ‘নূর ধান’। চিনি গুঁড়ার মতোই চিকন, তবে চিনি গুঁড়ার চেয়ে লম্বা। দেশের ঐতিহ্যবাহী দাদখানি, রাধুনিপাগল, কালোজিরা, বাঁশফুল, কাটারি ভোগের চেয়েও নূর ধানের চাল অনেক চিকন।

কৃষি গবেষক নূর মোহাম্মদ জানান, দেশের কোনো চিকন ধানেরই বিঘা প্রতি ১০-১২ মণের বেশি ফলন হয় না। তার উদ্ভাবিত নতুন ‘নূর ধান’ আমন ও বোরো দুই মৌসুমেই আবাদ করা যাবে। ধানের গড় ফলন হবে আমন মৌসুমে বিঘাপ্রতি ১৭ মণ ও বোরো মৌসুমে বিঘাপ্রতি ২১ মণ। সুগন্ধি না হলেও এই চালের ভাত খেতে ভালো লাগবে।

তিনি আরো জানান, এবার আমন ২০২১ মৌসুমে তার গবেষণা মাঠে তার উদ্ভাবিত দুই জাতের ধান কাটা হয়েছে। একটি চিকন ‘নূর ধান’ অপরটি ‘খরাসহিষ্ণু ধান’। ধান কাটা মাড়াই ও ঝাড়াই শেষে শুকনা ওজনে চিকন ‘নূর ধান’ বিঘাপ্রতি ১৭.৫ মণ ও ‘খরাসহিষ্ণু ধান’ বিঘা প্রতি ২০ মণ ফলন পাওয়া যায়। এ সময় উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম, সহকারী পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আনারুল ইসলাম, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ডি এফ এম ইমদাদুল ইসলাম, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন।

আলাপকালে স্থানীয় কৃষকরা জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রায় প্রতি বছরই খরায় নষ্ট হতো কৃষকের জমির ধান। সেই ধান রক্ষায় কাজ শুরু করেন কৃষক নূর মোহাম্মদ। এজন্য নিজের মাটির ঘরটি বানান গবেষণাগার। দেশীয় জাতের উন্নতি ঘটিয়ে ধানের জীবনকাল কমিয়ে আনেন। ফলন বাড়ান। ফলে জমিতে পানি কম লাগে, প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে ফসল রক্ষা পায়। খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলে কীভাবে কম পানি দিয়ে এবং কম সময়ে বেশি ধান ঘরে তোলা যায়, তা নিয়ে করছেন নিরন্তর গবেষণা। উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে বহু জাতের ধানের জিন সংমিশ্রণ করে একটি আধুনিক উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেন।

তানোরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ডি এফ এম ইমদাদুল ইসলাম বলেন, কৃষিক্ষেত্রে নিত্যনতুন প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে দ্রুত বাস্তবায়ন ও এলাকার কৃষকদের মধ্যেও নিত্যনতুন প্রযুক্তি বিস্তারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন কৃষক নূর মোহাম্মদ। তৃণমূল কৃষক পর্যায়ে ধানের নতুন নতুন সারি উদ্ভাবন হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা বিভিন্ন মৌসুমে নতুন নতুন দেশিবিদেশি জাতের ধানের অবস্থা তাদের নিজ এলাকায় দেখার সুযোগ পেয়েছেন। কৃষকরা তাদের পছন্দের জাতসমূহ চিহ্নিত করে বীজও সংগ্রহ করতে পারছেন। সে জন্য এলাকায় উফশী জাতের সম্প্রসারণ ত্বরান্বিত হচ্ছে। খরাসহিষ্ণু সারিগুলোর জীবনকাল কম হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরুর আগেই ধান কেটে ঘরে তোলা যাচ্ছে। আগাম ওঠার কারণে সেচের খরচ কম হচ্ছে। ভালো বাজার মিলছে। এ কারণে সারিগুলো বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য উপযোগী।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২৮, ২০২১ ৫:২৫ অপরাহ্ন
গর্বিত কৃষক উচ্চশিক্ষিত দেলোয়ার জাহান
কৃষি গবেষনা

মাটির মায়া ও ফসলের টান কৃষক, কৃষিবিদ ও গবেষক দেলোয়ার জাহানকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। এ দেশে পড়াশোনার মানেই যখন উচ্চবিলাসী স্বপ্ন, কর্পোরেট চাকরি, ব্যবসা, তখন দেলোয়ার জাহান দেশের একটি স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেও আন্তপ্রাণ কৃষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। গরিব কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে শোসন-বঞ্চনা থেকে পরিত্রাণের স্বপ্ন দেখেছেন। স্বপ্ন দেখেছেন, কীভাবে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়া শস্য উৎপাদন করা যায়, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কীভাবে কৃষি উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা যায়। কৃষিবিদ দেলোয়ার জাহানের মেধা-মননজুড়ে শুধু পরিশুদ্ধ ফসলের ভাবনা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনা করেছেন দেলোয়ার জাহান। অনার্সে দ্বিতীয় এবং মাস্টার্সে যৌথভাবে প্রথম হয়েছিলেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করেছেন এমফিল। এরপর সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে চাকরির সুযোগও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে না গিয়ে দেশে কীভাবে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়া ফসল উৎপাদন করা যায়, সে বিষয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন। নিজেও শুরু করেছেন স্বাস্থ্যসম্মত সবজি উৎপাদনের কাজ। সাংবাদিকতায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেও কৃষিকাজ কেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে দেলোয়ার জাহান জানান, আমি ছোটবেলা থেকেই একটা প্রাকৃতিক জীবনে ফিরতে চেয়েছি। কৃষকদের কৃষিকাজে বিভিন্ন সঙ্কট, দুর্বিপাক, ঝামেলা- এগুলো আমি ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি এবং এগুলোর মধ্যেই আমার বেড়ে ওঠা। কৃষিতে সাধারণত গরিব কৃষক যেভাবে বিভিন্ন কোম্পানি দ্বারা শোসনের শিকার হয়, সেগুলো থেকে রেহাই পেতে আমার সঙ্ঘবদ্ধ কাজ করতে চাওয়া। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীনই নিজেকে সেভাব গুছিয়েছি।

তিনি জানান, বাংলাদেশে ফসলের খেতে প্রতি মিনিটে ৭২ কেজি ‘বিষ’ ছেটানো হয়, যা মানব স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতিকর। এ জন্য বিকল্প পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক উপায়ে ফসলের চাষ শুরু করছেন তিনি ও তার সঙ্গীরা (সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে দেলোয়ারের পরিচিত ছিলেন)। শুরুর দিকে ২০১৩ সালে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার আমতলি গ্রামে জমি লিজ নিয়ে গ্রীষ্মকালীন সবজি উৎপাদন শুরু করেন। উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত তিনি নিজে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে জড়িত ছিলেন৷ আর তার সঙ্গীদের পরিবারও কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত৷

দেলোয়ার আর তার সঙ্গীরা মিলে ‘প্রাকৃতিক কৃষি ও বিপণনকেন্দ্র’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছেন৷ এর মাধ্যমে কৃষকদের পরিবেশবান্ধব উপায়ে কৃষিকাজে উৎসাহিত করা হয়। দেলোয়ার বলেন, ‘আমার খামারের আশেপাশে কৃষকরা কীটনাশক প্রয়োগ করে কৃষিকাজ করেন। তবে তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমার খামারে এসে সব দেখেশুনে প্রাকৃতিক উপায়ে কৃষিকাজে আগ্রহী হচ্ছেন৷’

এখন পর্যন্ত মানিকগঞ্জ, ঝিনাইদহ, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও নওগাঁ জেলার অনেক কৃষক এভাবে ফসল উৎপাদন করছেন৷ তাঁদের উৎপাদিত সবজি, ফল ঢাকায় বিক্রির জন্য মোহাম্মদপুরের সলিমুল্লাহ রোডে ‘প্রাকৃতিক কৃষি বিপণনকেন্দ্র’ চালু করা হয়েছে৷

তরুণদের মধ্যে কেউ যদি উচ্চশিক্ষার পর চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিকাজে জড়িত হতে চায়, তাহলে সেটি সম্ভব কি না, এই প্রশ্নের জবাবে দেলোয়ার জানান, তা সম্ভব এবং বাংলাদেশে এখন সেই পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ‘কেউ যদি সমন্বিত খামার করেন, যেখানে মাছ চাষ থাকবে, গরু থাকবে, দুধের জন্য ছাগল থাকবে, হাঁস থাকবে, সবজি থাকবে৷ আপনি যদি একটি সমন্বিত চাষ পদ্ধতিতে যান, সার্কেলটা যদি নিজে মেইনটেন করেন, মানে যে শাক আপনি বিক্রি করতে পারছেন না, সেটি আপনি গরুকে খাওয়াচ্ছেন, গরু থেকে যে গোবর পাচ্ছেন সেটি কেঁচোকে খাওয়াচ্ছেন, কেঁচো আপনাকে সার দিচ্ছে, সেই সার আপনি মাঠে দিয়ে দিচ্ছেন৷ মানে, পুরো সার্কেলটা যদি আপনি নিজে মেইনটেন করেন তাহলে যে কোনো ছেলেমেয়ের পক্ষে কৃষিকাজ করেই সম্ভব জীবিকা নির্বাহ সম্ভব’, বলেন দেলোয়ার৷

তবে তিনি বলেন, সমস্যা হচ্ছে তরুণরা মনে করে কৃষিকাজ মানে অচ্ছুতের কাজ৷ তাই এটি কেউ করতে চায় না৷ ‘কারণ চারপাশে এত রং, এত প্রত্যাশা জীবনে যে, কেউ আসলে কৃষিকাজ করতে চায় না৷ প্রচুর ছেলেমেয়ে আমাদের কাছে (প্রাকৃতিক কৃষির কাজ দেখতে) আসে৷ যে পরিমাণ আগ্রহ নিয়ে আসে তার দ্বিগুণ পরিমাণ আগ্রহ নিয়ে চলে যায়’, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানালেন দেলোয়ার।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২৬, ২০২১ ১২:৫৫ অপরাহ্ন
লবণাক্ত জমিতে ফলবে তিন ফসল
কৃষি গবেষনা

জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে লবণাক্ততার তীব্রতায় দিন দিন অনাবাদি জমির পরিমাণ বাড়ছে। এখন বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাতের কারণে লবণাক্ত এলাকায় শুধু আমনের আবাদ করা সম্ভব হলেও মৌসুমের শেষ দিকে বৃষ্টি কমায় ফসলের দানার সংখ্যা হ্রাস পায়। এতে আমনের আবাদও খুব ভালো হয় না। কিন্তু এখন সেই জমিতেই একটি নয়, তিনটি ফসলের আবাদ করা সম্ভব হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বিজ্ঞানীরা লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য (জিনোম সিকোয়েন্স) উন্মোচন করায় দেশের ধান গবেষণায় নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।

ধানের মধ্যে লবণাক্ততা সহিষ্ণু যে জিনগুলো শনাক্ত করা হয়েছে, তা উচ্চ ফলনশীল ধানের জাতে অনুপ্রবেশ করিয়ে খুব ভালো ফল পাওয়া যাবে। তারা বলেন, লবণাক্ত জমিগুলো দ্রুত আবাদযোগ্য করে তুলতে পারলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে ২০ লাখ হেক্টর লবণাক্ত জমি রয়েছে। এর মধ্যে শুধু উপকূলীয় অঞ্চলেই লবণাক্ত জমির পরিমাণ ১০ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত জমির পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ৩৩ হাজার হেক্টর। সে হিসেবে গত চার যুগে উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত জমির পরিমাণ বেড়েছে ২৭ শতাংশের বেশি।

উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষিতে লবণাক্ততার প্রভাব নিরুপণে সম্প্রতি গবেষণা চালায় মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই)। তাদের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, শুধু লবণাক্ততার কারণেই প্রতি বছর উপকূলীয় জেলাগুলোতে ৩০ লাখ টন কম খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে।

গবেষণায় দেখা যায়, লবণাক্ততা বাড়তে থাকায় উপকূলীয় অঞ্চলের মাটিতে অণুজীবের সক্রিয়তা কমে যাচ্ছে। একই সঙ্গে মাটিতে জৈব পদার্থ, নাইট্রোজেন ও ফসফরাসের সহজলভ্যতাও কমে যাচ্ছে।

এর বিপরীতে বাড়ছে কপার ও জিংকের মাত্রা। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাতের কারণে লবণাক্ত এলাকায় শুধু আমনের আবাদ করা সম্ভব হলেও মৌসুমের শেষ দিকে বৃষ্টি কমায় ফসলের দানার সংখ্যা হ্রাস পায়। এতে আমনের আবাদও খুব ভালো হয় না। এসআরডিআইয়ের হিসেব অনুযায়ী, উপকূলীয় অঞ্চলে মাঝারি থেকে খুবই তীব্র মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ৮ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর। এসব জমিতে প্রতি বছর লবণাক্ততার কারণে হেক্টর প্রতি গড়ে ৩ দশমিক ৪৮ টন শস্য উৎপাদন কম হচ্ছে। এ হিসেবে শুধু উপকূলীয় অঞ্চলের জমি থেকেই ৩০ লাখ ২৭ হাজার টন ফসল কম পাওয়া যাচ্ছে। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কার্যকর উপায় লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের উন্নত জাত উদ্ভাবন। সম্প্রতি বিনার ধানের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনের ফলে এটি সহজ হয়ে গেছে।

কৃষিবিজ্ঞানীরা বলেছেন, ধানের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনের বিনা ও বাকৃবির যৌথ গবেষণায় বিভিন্ন মাত্রার গামা রেডিয়েশন প্রয়োগ করে অর্ধলক্ষাধিক মিউট্যান্ট (রূপান্তরিত কোষ) সৃষ্টি করা হয়। এর পর সেগুলো থেকে নানামুখী পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এমজি জেনারেশনে (রূপান্তরিত কোষগুলো যাচাই-বাছাই করে) তিনটি উন্নত মিউট্যান্ট শনাক্ত করা হয়েছে। প্রাপ্ত মিউট্যান্টগুলো মাতৃগাছের জাতের চেয়ে উন্নত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। এ ছাড়া নতুন জাতটি ৮ ডিএস/এম (মাটিতে ৮ মাত্রার লবণাক্ততা প্রতিরোধ করতে পারবে) এবং ১৫ দিন জলমগ্নতা সহিষ্ণু হবে।

বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, এ গবেষণালব্ধ তত্ত্ব-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই বাংলাদেশে প্রথম লবণ ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের জীবন রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধান গবেষণায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধানের মধ্যে লবণাক্ত সহিষ্ণু যে জিনগুলো শনাক্ত করা হয়েছে তা এখন উচ্চ ফলনশীল ধানের জাতে অনুপ্রবেশ করিয়ে খুব ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, মানুষ এখন সরু চাল খেতে চায়। তাই সরু জাতের ধানের মধ্যে লবণাক্ত সহিষ্ণু জিনগুলো অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে উন্নত জাতের ধান উদ্ভাবন করা হবে। ফলে যে লবণাক্ত এলাকায় আগে একটি ফসল উৎপাদন হতো। সেখানে তিনটি ফসল খুব সহজেই আবাদ করা সম্ভব হবে।

এ প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে ও ভবিষ্যতে খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে লবণাক্ত, হাওরসহ প্রতিকূল এলাকায় বছরে দু-তিনটি ফসল উৎপাদন করতে হবে। এখন সেখানে মাত্র একটি ফসল উৎপাদন হয়। পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনের ফলে প্রতিকূল পরিবেশ-সহিষ্ণু ধানের ফলন সহজতর হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২৪, ২০২১ ১২:২৫ অপরাহ্ন
লবণ-সহিষ্ণু ধানের জীবনরহস্য উন্মোচন
কৃষি গবেষনা

দেশে প্রথমবারের মতো ধানের পূর্ণাঙ্গ জীনোম সিকোয়েন্স বা জীবনরহস্য ও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী জিন আবিষ্কার করা হয়েছে। লবণাক্ততা ও বন্যা সহিষ্ণু বিনাধান-২৩ এর উপর গবেষণা করে এই সাফল্য পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) একদল গবেষক।  

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। এসময় ধানের জীবন রহস্যের উন্মোচন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

বিনা মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলামের নেতৃত্বে বাকৃবি’র গবেষক পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্যা ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, বিনা’র প্লান্ট ব্রিডিং বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শামছুন্নাহার বেগম এবং পিএইচডি শিক্ষার্থী মানস কান্তি শাহা গবেষণাটির সংগে জড়িত ছিলেন।

ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, সাধারণত বিনা উদ্ভাবিত জাতগুলোতে বিভিন্ন রেডিয়েশন প্রয়োগের মাধ্যমে জাত উন্নয়ন করা হয়। তবে এই রেডিয়েশনের প্রভাবে জিনের কী ধরনের পরিবর্তন হয় তা আগে জানা সম্ভব হতো না। আমাদের এই উদ্ভাবনের ফলে এখন থেকে যেকোনো ধানের জাতের জিন পর্যায়ে কী ধরনের পরিবর্তন হয় তা নিশ্চিতভাবে জানা যাবে।

গবেষণা সম্পর্কে অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্যা বলেন, বিনাধান-২৩ একটি লবণাক্ত ও বন্যা সহিষ্ণু ধানের জাত। ২০১৯ সালে বাকৃবি ও বিনার গবেষকদের প্রচেষ্টায় বিনাধান-২৩ ও তা থেকে উৎপন্ন তিনটি মিউটেন্ট (রেডিয়েশন দ্বারা প্রভাবিত জাত) ধানের জিনোম সিকোয়েন্স সম্পন্ন করা হয়, যা বাংলাদেশে প্রথম।

এই জিনোম সিকোয়েন্স উদ্ভাবনের ফলে দেশে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ওই ধানের জাত থেকে আমরা প্রতিকূল আবহাওয়া সহিষ্ণু ২৩টি জিন, উচ্চ ফলনশীল বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী ১৬টি জিন এবং চালের আকার-আকৃতির জন্য দায়ী চারটি জিন শনাক্ত করতে পেরেছি।

তিনি আরও বলেন, এই গবেষণাকে কাজে লাগিয়ে ধানের জাতের শনাক্তকৃত জিনগুলো পরবর্তীতে দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানীরা রেফারেন্স জিনোম হিসেবে ব্যবহার এবং ধানের উচ্চ ফলনশীল জাতে স্থানান্তর করতে পারবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২০, ২০২১ ৪:২৫ অপরাহ্ন
ব্ল্যাক এবং রেড রাইস চাষে উদ্ভাবনী কৃষক মনজুরের সাফল্য
কৃষি গবেষনা

কুমিল্লা জেলার সদর উপজেলার মনাগ্রামের কৃষক মনজুর হোসেন ৩০ একর জমিতে ২১ জাতের সবুজ আর বেগুনী পাতার কালো চাল ও লাল চালের (ব্ল্যাক অ্যান্ড রেড রাইস) ধানের আবাদ করে সাড়া ফেলেছেন।

জেলার কৃষি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে জমির ধান কাটা শুরু হয়। ফলন ভালো হওয়ায় বেশ খুশি কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারাও।

সরেজমিনে জানা যায়, কৃষক মনজুর এবার ৩০ একর (১২ দশমিক ১৪ হেক্টর) জমিতে ব্লক পদ্ধতিতে জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ভারত, কম্বোডিয়া, নেপাল, ক্যানডিয়ানসহ নানা দেশের মোট ২১ জাতের ধানের চাষ করেছেন। ২০ একর কালো চালের ও ১০ একর লাল চালের ধানের চাষ করেন তিনি। এসবের মধ্যে কোনো জাতের চাল অনেক বেশি কালো, কোনোটি লাল, আবার কোনটি লালচে লাল রঙের। রয়েছে সুগন্ধিযুক্ত ব্ল্যাক রাইসও।

স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ছালেকুর রহমান জানান, মনজুর হোসেন একজন উদ্ভাবনী কৃষক। তিনি ২০১৮ সালে মাত্র ২৭ টি বীজ দিয়ে ব্ল্যাক রাইস উৎপাদনের যাত্রা শুরু করেন। পরে বিভিন্ন দেশের বীজ সংগ্রহ করেন। বর্তমানে কালো চাল (ব্ল্যাক রাইস) থেকে ধানের চারা উৎপাদন করে জমিতে চাষ করছেন তিনি। কৃষি গবেষক ও কর্মকর্তারা চাষাবাদের তদারকি করেছেন। এবার ফলন অনেক ভালো হয়েছে।

কৃষি উন্নয়নের অবদান রাখায় একাধিক বার রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক মনজুর হোসেন বলেন, এ মৌসুমে মোট ৩০ একর জমিতে ব্ল্যাক-রেড রাইসের চাষ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ব্ল্যাক ও রেড রাইসের বীজ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চাই। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিডিউট ও কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর একই সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop