৭:৩৪ অপরাহ্ন

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : মার্চ ২২, ২০২৩ ১০:৫০ পূর্বাহ্ন
ধানের ব্লাস্ট রোগ দমনে যা করবেন
কৃষি গবেষনা

ধানের ব্লাস্ট একটি ছত্রাকজনিত মারাত্মক ক্ষতিকারক রোগ। বোরো ও আমন মৌসুমে সাধারণত ব্লাস্ট রোগ হয়ে থাকে। অনুকূল আবহাওয়ায় এ রোগের আক্রমণে ফলন শতভাগ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

চারা অবস্থা থেকে শুরু করে ধান পাকার আগ পর্যন্ত যে কোন সময় রোগটি দেখা দিতে পারে। এটি ধানের পাতা, গিট এবং নেক বা শীষে আক্রমণ করে থাকে। সে অনুযায়ী রোগটি পাতা ব্লাস্ট, গিট ব্লাস্ট ও নেক ব্লাস্ট নামে পরিচিত।

আমন মৌসুমে সবি সুগন্ধি জাতে এবং বোরো মৌসুমে ব্রিধান-২৮, ব্রিধান-৫০, ব্রিধান-৬৩, ব্রিধান-৮১, ব্রিধান-৮৪, ব্রিধান-৮৮সহ সরু আগাম সুগন্ধি জাতে শীষ ব্লাস্ট রোগ বেশি হয়ে থাকে। এ রোগ প্রতিরোধে কী করবেন সে করণীয় জানিয়েছে কৃষি তথ্য সার্ভিস।

রোগ আক্রমণের পরে করণীয়:
১. আক্রান্ত জমিতে ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ সাময়িক বন্ধ রাখতে হবে।
২. ব্লাস্ট রোগের প্রাথমিক অবস্থায় জমিতে ১-২ ইঞ্চি পানি ধরে রাখতে পারলে এ রোগের ব্যাপকতা অনেকাংশে হ্রাস পায়। শুকনা জমিতে এই রোগ বেশি দেখা যায়।
৩. পাতা ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলে বিঘা প্রতি অতিরিক্ত ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

৪. ব্লাস্ট রোগের জীবাণু প্রধানত বাতাসের মাধ্যমে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দ্রুত ছড়ায়। দিনের বেলায় গরম (২৫-২৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড) ও রাতে ঠাণ্ডা (২০-২২ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড), শিশিরে ভেজা দীর্ঘ সকাল, অধিক আর্দ্রতা (৮৫% বা তার অধিক), মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, ঝড়ো আবহাওয়া এবং গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি এ ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করলে ধানের জমিতে রোগ হোক আর না হোক, থোর ফেটে শিষ বের হওয়ার সময় একবার এবং ৫-৭ দিন পর আরেকবার ৫ শতাংশ জমির জন্য ১০ লিটার পানিতে ৬ গ্রাম টেবুকোনাজল ৫০% + ট্রাই-ফ্লক্সিস্টোবিন ২৫ শতাংশ গ্রুপের ছত্রাকনাশক অথবা ৮ গ্রাম ট্রাইসাইক্লাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক পানিতে ভালভাবে মিশিয়ে শেষ বিকালে স্প্রে করতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ৮, ২০২৩ ৯:০২ অপরাহ্ন
জাতীয় পাট পুরস্কার পাচ্ছেন ১১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান
কৃষি গবেষনা

পাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন-রপ্তানি বৃদ্ধিতে অবদানের জন্য ১১ ব্যবসায়ী, বিজ্ঞানী, চাষি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দিচ্ছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।

রোববার (৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক এ তথ্য জানান।

পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- পাটবীজ, পাট ও পাটজাত পণ্যের গবেষণায় সেরা গবেষক ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহমুদ আল হোসেন, সেরা পাটবীজ উৎপাদনকারী চাষি ক্যাটাগরিতে কিশোরগঞ্জের আবু হানিফ, সেরা পাট উৎপাদনকারী চাষি পাবনার মো. এনামুল হক, পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী সেরা প্রতিষ্ঠান (হেসিয়ান, সেকিং ও সিবিসি) উত্তরা জুট ফাইবার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড, পণ্য রপ্তানিকারক সেরা প্রতিষ্ঠান (হেসিয়ান, সেকিং ও সিবিসি) জোবাইদা করিম জুট মিল মিলস লিঃ।

এছাড়াও পুরস্কার পাচ্ছেন পাটের সূতা উৎপাদনকারী সেরা পাটকল হিসাবে আকিজ জুট মিলস লিমিটেড, পাটের সূতা রপ্তানিকারক সেরা প্রতিষ্ঠান হিসাবে জনতা জুট মিলস লিমিটেড, বহুমুখী পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী সেরা পাটকল হিসাবে সোনালি আঁশ লিমিটেড, বহুমুখী পাটজাত পণ্য রপ্তানিকারক সেরা প্রতিষ্ঠান হিসাবে ক্রিয়েশন (প্রাঃ) লিমিটেড, বহুমুখী পাটজাত পণ্যের সেরা নারী উদ্যোক্তা হিসাবে তরঙ্গ ও বহুমুখী পাটজাত পণ্যের সেরা পুরুষ উদ্যোক্তা হিসাবে গোল্ডেন জুট প্রোডাক্ট।

এছাড়াও সম্মাননার জন্য সুপারিশ করা অ্যাসোসিয়েশন ও সমিতিগুলো হচ্ছে: বাংলাদেশ ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ী সমিতি, বাংলাদেশ পাট চাষি সমিতি, বাংলাদেশ চারকোল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ লেমিনেটিং জুট ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতি, বাংলাদেশ জুট গুডস্ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেজিইএ), বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএ), বাংলাদেশ জুট মিলস্ অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ), বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ)।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ৬, ২০২৩ ১:৪৬ অপরাহ্ন
প্রযুক্তি ব্যবহারে ধানের জাত উদ্ভাবনে সময় কমছে ৫-৭ বছর
কৃষি গবেষনা

সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধানের জাত উদ্ভাবন প্রক্রিয়ার সময় ৫-৭ বছর কমিয়ে আনা হচ্ছে। আগে যেখানে একটি জাত উদ্ভাবনে ১০-১৫ বছর লেগে যেত, এখন তা ৮-১০ বছরে সম্পন্ন করা যাবে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে (ব্রি) দুই দিনব্যাপী ট্রান্সফরমিং রাইস ব্রিডিং (টিআরবি) শীর্ষক কর্মশালা বিজ্ঞানীরা এ তথ্য জানান। রোববার (৫ মার্চ) গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, ইন্টারন্যাশনাল রাইচ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্ল্যাটফর্ম লিডার ড. হ্যান্স রাজ ভারদোয়াজ, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের (বিএমজিএফ) সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ড. গ্যারি এটলিন।

ইরি ও ব্রির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইরি বাংলাদেশ অফিসের সিনিয়র উদ্ভিদ প্রজননবিদ ড. রফিকুল ইসলাম। কর্মশালায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রির পরিচালক (গবেষণা) ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে চলমান ট্রান্সফরমিং রাইস ব্রিডিং বা টিআরবি প্রকল্পের হালনাগাদ অগ্রগতি ও অর্জন উপস্থাপন করেন ব্রির মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান ড. খোন্দকার মো. ইফতেখারুদৌলা। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পক্ষে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মো. হাসানুজ্জামান রনি।

বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের (বিএমজিএফ) অর্থায়নে ব্রিতে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে ধানের জাত উদ্ভাবন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ পরিস্থিতিতে উন্নতজাতের ধান গবেষণার বর্তমান পরিস্থিতি ও সম্ভাবনা নিয়ে কর্মশালায় আলোকপাত করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে ব্রি মহাপরচিালক মো. শাহজাহান কবীর বলনে, বিএমজিএফের আর্থিক সহায়তায় ও ইরির কারিগরি সহায়তায় ট্রান্সফরমিং রাইস ব্রিডিং বা টিআরবি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাত উদ্ভাবন প্রক্রিয়ার সময়কাল ৫-৭ বছর কমিয়ে আনা হচ্ছে। আগে যেখানে একটি জাত উদ্ভাবনে ১০-১৫ বছর লেগে যেত, এখন তা ৮-১০ বছরে সম্পন্ন করা যাবে।

তিনি বলেন, গবেষণা কার্যক্রমের আধুনিকীকরণের মাধ্যমে আগামী দিনে ধানের জাতে জেনেটিক গেইন অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ভৌগলিক স্থান, বাজার ও কৃষকের চাহিদাভিত্তিক ধানের জাত উদ্ভাবনে ব্রির সক্ষমতা বেড়েছে। ট্রান্সফরমিং রাইস ব্রিডিংয়ের পাশাপাশি জাত উদ্ভাবনের সময় কমানোর জন্য আমরা স্পিড ব্রির্ডি কৌশল অবলম্বন করছি।

ব্রির পরিচালক (গবষেণা) ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান জানান, টিআরবি কৌশল অনুসরণের মাধ্যমে ধানের ফলনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমাকে অতিক্রম করা যাবে। এ প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে ফলন স্তরকে অতিক্রম করে তৃতীয় স্তরের উচ্চ ফলনশীল ও গুণগত মানসম্পন্ন জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। ভৌগলিক স্থান, বাজার ও কৃষকের চাহিদাভিত্তিক দুই লাখ ৭৭ হাজার ৯৩৮টি ফিক্সড লাইন উদ্ভাবন করা হয়েছে, যা থেকে প্রতিনিয়ত নতুন জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, এরইমধ্যে ব্যাকক্রস কৌশল ব্যবহার করে প্রতি শীষে ৮৫০টি পুষ্ট দানা উৎপাদনক্ষম কৌলিক সারি উদ্ভাবন করা হয়েছে, যা বর্তমানে অষ্টম প্রজন্মে রয়েছে। যেখান থেকে ভবিষ্যতে আরও অধিক উৎপাদনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে।

কর্মশালায় ব্রি, বিনা, ইরি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কৃষিবিজ্ঞানী, সরকারি-বেসরকারি বীজ উৎপাদক ও গণমাধ্যমকর্মীসহ শতাধিক প্রতিনিধি কর্মশালায় অংশ নেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২, ২০২৩ ৬:২৬ অপরাহ্ন
গবেষণার কারণেই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ: প্রধানমন্ত্রী
কৃষি গবেষনা

সফল গবেষণার কারণেই দেশ আজ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমদানি ব্যয়, মূল্যস্ফীতি সব মোকাবিলা করেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ও গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।  এসময় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেয়ার কথাও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি যার ভিত্তি বঙ্গবন্ধুই স্থাপন করে যান। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন রাঙামাটির বেতবুনিয়াতে তিনি দেশের প্রথম ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা এদেশের মানুষের উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সেটা করে যেতে পারেননি। পঁচাত্তরে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সে সময়ে প্রাণ হারান আমার পরিবারের ১৮ জন সদস্য।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে সমুদ্রসীমায় আমাদের যে অধিকার সে বিষয়ে কাজ শুরু করি। মাত্র ৫ বছরে আমরা সে কাজ সম্পন্ন করতে পারিনি। কিন্তু পরেরবার ক্ষমতায় এসে আমরা সে অধিকার বুঝে নিয়েছি। জাতির পিতা শুধু করেই দিয়ে যাননি, আমাদের জন্য সবকিছুর ভিত্তি প্রস্তর করে গেছেন তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২৩ ৭:২০ অপরাহ্ন
ফলন বাড়াতে কৃষিবিদদের গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
কৃষি গবেষনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক প্রতিকূল পরিস্থিতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে খাদ্যশস্যের ফলন বাড়াতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কৃষিবিদদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী আজ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)’র সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, আমাদের নিজেদের খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে হবে।’ শেখ হাসিনা আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতেও বাংলাদেশকে ঐতিহ্যগত শস্যের পাশাপাশি নতুন জাতের শস্য উৎপাদন করতে হবে।

তিনি গাজীপুরে ব্রি-তে বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।

টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরতে বহুমুখী গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন অংশীদারিত্বে সহযোগিতার লক্ষ্যে কানাডার সাচকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব ফুড সিকিউরিটির সাথে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর ব্রি-তে এই কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়।

যদিও প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলাদেশ শুধু খাদ্যশস্য উৎপাদনেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেনি, বরং বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, ফলমূল ও অন্যান্য কৃষিপণ্যও উৎপান করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুদ্ধে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, তাই তাঁর সরকার দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে তাল মেলাতে, আমরা ন্যানো-প্রযুক্তি, বায়ো-ইনফরমেটিক্স, মেশিন, ইন্টারনেট ও অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে জেনেছি। আমাদের এই প্রযুক্তিগুলো কাজেও লাগাতে হবে।’

কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ‘ব্রি’র ৫০ বছরের গর্ব ও সাফল্য’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী ব্রি’তে আগমন করে সেখানে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন। এছাড়াও তিনি ব্রি’র সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উড়িয়ে দেন।

এ সময় কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জিন বালি, গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার স্টেভেন ওয়েব অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রী চারাগাছ রোপন, ব্রি ল্যাবরোটরি ও এর বিভিন্ন উদ্ভাবন পরিদর্শন এবং ‘ধান-কাব্য’ নামের একটি সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করাসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। এছাড়াও তিনি ব্রি ও বিএআরসি এর পাঁচটি গবেষণা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে, দেশের জনসংখ্যা দিন দিনই বাড়ছে। তিনি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও আমরা তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে স্বনির্ভর করে এবং দেশের বছওে ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি মিটিয়ে খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। ২০০১ সালে বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় আসে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ পুনরায় খাদ্য ঘাটতির সম্মুখিন হয়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করেই দেশে ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি পায়। আওয়ামী লীগ সরকার এ অবস্থা মোকাবেলায় কৃষি গবেষণা, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করে এবং কৃষকদের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল বীজ-সার বিতরণ করে এবং কৃষকদেরকে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হয়। এই উদ্যোগের ফলে আমরা খারাপ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে সামনে এগিয়ে যাই। ]

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের ফসল চাষ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় কৃষি উৎপাদন পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, ব্রি উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে।

এ পযর্ন্ত ১১১ ধরণের ধানের আধুনিক জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে ১০৪ টি ইনব্রিড এবং ৭ হাইব্রিড। এর মধ্যে ২৪টি বিভিন্ন প্রতিকুলতা সহিঞ্চু জাত রয়েছে। যার ১০টি লবনাক্ততা সহিঞ্চু, তিনিটি ডুবে যাওয়া সহিঞ্চু, তিনটি খরা সহিঞ্চু, চারটি শীত সহিঞ্চু, দু’টি জলোচ্ছ্বাসে ডুবে যাওয়া সহিঞ্চু, একটি আধা গভীর জল এবং দ্বৈত সহিঞ্চু (সাল+সাব)।

এ ছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ১৩টি প্রিমিয়াম মানের, পাঁচটি জেডএন সমৃদ্ধ, এবং তিনটি নি¤œ জিআই (গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) ধান উদ্ভাবন করা হয়েছে। দেশের মোট ধানি জমির ৮০ শতাংশেরও বেশি ব্রি ধানের চাষ করা হচ্ছে। জাতীয় ধান উৎপাদনে এর অবদান প্রায় ৯১ শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞানীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ব্রি’র বিভিন্ন জাতের ধান উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশে একটি মাত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে। এর মধ্যে দুটি করা হয়েছে কৃষি শিক্ষার জন্য। এদু’টি হচ্ছে দিনাজপুর হাজী দানেশ ও পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি আরও বলেন, তার সরকার শেরে বাংলা ও বঙ্গুবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী প্রায় আড়াই কোটি শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার বিশেষ করে গবেষণার জন্য বৃত্তি প্রদান করছে। তিনি বলেন, আমি সব সময় মনে করি গবেষণা ছাড়া ভাল কিছু করা সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ হিসাবে সরকার কৃষি গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। পাশাপাশি, সরকার স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং বিজ্ঞান গবেষণায়ও দৃষ্টি দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কৃষিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু’র পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা কৃষিতে পদক্ষেপ নিয়েছি। কৃষির যান্ত্রিকায়নের জন্য আমরা বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছি।

সরকার প্রধান দেশের তরুণদের কৃষিতে সম্পৃক্ত হওয়ার ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করে বলেন, তাদের স্কুল জীবন থেকেই এটি শুরু করতে হবে। বাসস

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২৩ ৫:২৮ অপরাহ্ন
শেকৃবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফয়েজ, মহাসচিব মেজবাহ
কৃষি গবেষনা

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এর ২০২৩-২৫ সেশনের ৪৩ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব ও বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য ফয়েজ আহমেদকে সভাপতি ও অফিসার্স ক্লাব ঢাকার সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন আহমেদকে মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্বদ্যিালয় অডিটরিয়ামে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এর পুনর্মিলনী ও বার্ষিক সাধারণ সভায় এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, জ্যেষ্ঠ সহ- সভাপতি সাবেক সচিব কৃষিবিদ মোঃ নুরুল ইসলাম পিএইচডি, সহ-সভাপতি ডিএই এর সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ এস তাসাদ্দেক আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব কৃষিবিদ ড. মোঃ সাইদুর রহমান সেলিম, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের সাবেক সচিব কৃষিবিদ এম এম মিজানুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মসিউর রহমান হুমায়ুন, কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মোঃ সালাহউদ্দিন মাহমুদ, কোষাধ্যক্ষ হলেন কেআইবি কোষাধ্যক্ষ কৃষিবিদ এম আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম-কোষাধ্যক্ষ শেকৃবির কীটতত্ত বিভাগের কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ডিএই এর পরিচালক কৃষিবিদ কাজী আফজাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক কেআইবি ঢাকা মেট্রোপলিটনের সাধারণ সম্পাদক, কৃষিবিদ ড. মোঃ তাসদিকুর রহমান সনেট, আন্তর্জাতিক সেমিনার ও গবেষণা সম্পাদক শেকৃবির সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর কৃষিবিদ হারুন অর রশিদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নর্থ বেঙ্গল এগ্রোফার্ম লিঃএর পরিচালক কৃষিবিদ এরশাদ আলী বাবুল , সমাজকল্যাণ সম্পাদক বিএডিসি এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এ কে এম ইউসূফ হারুন, ক্রীড়া সম্পাদক বিজেআরআই এর পিএসও কৃষিবিদ ড. শাহীন পলান, দপ্তর সম্পাদক কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মোঃ ফরহাদ হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শেকৃবির কৃষি বনায়ন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ কৃষিবিদ প্রফেসর ড. নাজমুন নাহার নাজমা।

নির্বাহী সদস্য পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এটিআই এর সাবেক অধ্যক্ষ কৃষিবিদ মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগের সচিব কৃষিবিদ ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, ডিএমপি কমিশনার কৃষিবিদ খন্দকার গোলাম ফারুক, কেআইবির মহাসচিব কৃষিবিদ মোঃ খায়রুল আলম প্রিন্স, বিএআরসির সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. ভাগ্য রাণী বণিক, কেআইবির সাবেক মহাসচিব কৃষিবিদ আনোয়ারুন নবী মুজমদার বাবলা, ন্যশনাল ব্যাংকের এভিপি কৃষিবিদ মোঃ মাহফুজুর রহমান রিন্টু, নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সিইও কৃষিবিদ মীর শহিদুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কৃষিবিদ আমিনুল বারী মিরু, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব কৃষিবিদ ড. হারুন অর রশিদ বিশ্বাস, ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার লিঃএর এমডি কৃষিবিদ কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান শ্যামল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব কৃষিবিদ ফরিদ আহমেদ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কৃষিবিদ এস এম আলম, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কৃষিবিদ ড. জি এম ফারুক ডন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কৃষিবিদ ড. মোঃ আবুল হোসেন, ডিএই এর অতিঃ পরিচালক কৃষিবিদ ড. ফ ম মাহবুবুর রহমান, বিএআরআই এর পিএসও কৃষিবিদ মাহবুবুল হক মনু,গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ, বিএআরআই এর পিএসও কৃষিবিদ ইসহাকুল ইসলাম ইসহাক, বিএডিসির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ মুকসুদ আলম খান মুকুট, শেকৃবির প্রক্টর কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মির্জা হাসানুজ্জামান, সাংবাদিক কৃষিবিদ সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক এবং সাংবাদিক কৃষিবিদ ফাইজুল সিদ্দিকী।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২৩ ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
পুকুরপাড়ে সবজি চাষে সফল ঈশ্বরদীর চাষিরা
কৃষি গবেষনা

দুটি পুকুরে মাছ চাষ করেন মারমী গ্রামের সুজন দেওয়ান। তিনি জানান, মাছ চাষের পাশাপাশি কলা, পেঁপে, বেগুন ও শিমের আবাদ করেছেন। বিষমুক্ত এসব সবজি পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে মাছ চাষের খরচ তুলেছেন। পুকুরে যারা মাছ চাষ করেন; তারা যদি পুকুরপাড় ফেলে না রেখে সবজি ও দেশীয় ফল আবাদ করেন, তাহলে ফল-মূল বিক্রি করে মাছ চাষের খরচ কমে যাবে।

পুকুরপাড়ে সবজি ও দেশীয় ফলের আবাদ করে পাবনার ঈশ্বরদীর মাছ চাষিদের ভাগ্য বদলে গেছে। মাছ চাষের ৩৫ থেকে ৪০ ভাগ লভ্যাংশ আসে পুকুরপাড়ে সবজি ও দেশীয় ফল-মূলের আবাদে।

ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ও মুলাডুলি ইউনিয়নের প্রায় ৬ শতাধিক পুকুরপাড়ে মাছ চাষিরা পরিকল্পিতভাবে সবজি ও দেশীয় ফলের আবাদ করছেন। দাশুড়িয়া ও মুলাডুলি ইউনিয়নের প্রায় ১০ গ্রামজুড়ে পদ্ম ও চামগড়া বিল। বছরজুড়েই জলাবদ্ধতার কারণে এ বিলের বেশিরভাগ জমিতে একসময় কোনো ফসল ফলতো না। বিলের অল্প জমিতে ফসল হলেও সেগুলো এক ফসলি জমি। তাই এসব জমিতে যারা পুকুর খনন শুরু করেন। বিলগুলো ঘুরে দেখা যায়, বিশাল বিলের যতদূর চোখ যায়, সবুজের হাতছানি। পুকুরপাড়ের মাচায় ঝুলছে লাউ, কুমড়া, শসা, ঝিঙা, শিম, বরবটি, পুঁইশাক। পাশাপাশি ঢ্যাঁড়শ, করলা, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজি চাষ হচ্ছে। এ ছাড়াও পুকুরপাড়ে দেশীয় কলা ও পেঁপের ব্যাপক ফলন হয়েছে।

শতাধিক পুকুর খনন করা হয়। পুকুরের পাড় চওড়া করে তৈরি করা হয়, যাতে সবজি ও দেশীয় ফলের চাষ করা যায়। ‘ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খনন করে কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্থ করা হচ্ছে’-এ ধারণার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন মাছ চাষিরা। মাছের পাশাপাশি সবজি ও ফল চাষ করে অনেকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পুকুরপাড়সহ আবাদযোগ্য কোনো জমি যেন পতিত না থাকে। সেজন্য মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা তৎপর। কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তারা পুকুরপাড়, বাড়ির আঙিনা, পরিত্যক্ত জমিতে ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন।

দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম মাঝি জানান, ‘মারমী, শ্যামপুর, সুলতানপুর, হাতিগড়াসহ ১০ গ্রামের মধ্যবর্তী পদ্ম ও চামগড়া বিলজুড়ে প্রায় ৬০০ পুকুর। এসব পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুরপাড়ে সবজি চাষ করে চাষিদের দিন বদলে গেছে। এখন তারা স্বাবলম্বী।’

উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা জানান, ২০১৭-১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী এ উপজেলায় পুকুর আছে ২,৪৭৬টি। বর্তমানে পুকুরের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা এসেছে। তাই পুকুরের পাড়ে সবজি ও দেশীয় ফলের চাষাবাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সুফল পাওয়া গেছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৪, ২০২৩ ৮:৪৭ অপরাহ্ন
কেঁচো সারে ঝুঁকছেন চাষিরা, বাড়ছে পতিত জমিতে চাষ
কৃষি গবেষনা

দিন দিন ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) তৈরির প্লান্ট বাড়ছে বাগেরহাটে। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতায় শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ভার্মি কম্পোস্ট প্লান্ট স্থাপন করছেন চাষীরা।

এসব প্লান্টে উৎপাদন হচ্ছে বিপুল পরিমাণ কেঁচো সার। দাম কম এবং সহজলভ্য হওয়ায় কৃষকদের মাঝে কেঁচো সারের ব্যবহার বাড়ছে। কেঁচো সার দিয়ে পতিত জমিতে ফল ও সবজি চাষ শুরু করছেন প্রত্যন্ত এলাকার মানুষেরা। ফলে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন বাড়ছে ভোক্তা পর্যায়ে। পতিত জমিতে উৎপাদিত ফল ও সবজিতে পুষ্টি চাহিদা পূরণ হচ্ছে হত দরিদ্রদের। সরকারি সহযোগিতার মাধ্যমে ভার্মি কম্পোস্টের উৎপাদন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাটের ৯টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৯৪২টি ভার্মি কম্পোস্ট প্লান্ট রয়েছে। এসব প্লান্টে গত বছর (২০২২) ৪৭১ মে. টন কম্পোস্ট সার উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদন বাড়াতে ৪ হাজার ৯৯০ জন কৃষককে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করে ৩ হাজার ৮৮০ হেক্টর পতিত জমিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। এর বাইরে আরও ৫ হাজার ১৭৪ হেক্টর আবাদযোগ্য জমি পতিত রয়েছে। এসব জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে চেষ্টা করছে কৃষি বিভাগ।

শুধু কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নয়, ভার্মি কম্পোস্ট সম্প্রসারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অর্থায়নে পুষ্টি উন্নয়নে অংশগ্রহণমূলক সমন্বিত প্রকল্প (ক্রেন) নামের একটি প্রকল্প কাজ করছে। জেলার মোংলা, কচুয়া, মোল্লাহাট ও শরণখোলা উপজেলায় ৩০০ জন ভার্মি কম্পোস্ট উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়েছে। এই ভার্মি কম্পোস্ট প্লান্টে উৎপাদিত সার বিক্রির জন্য রয়েছে আরও ১৫ জন কৃষি উদ্যোক্তা। তারা নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে কেচো সার বিক্রি করে থাকেন। ভার্মি কম্পোস্টে রাসায়নিক সারের ব্যবহার হ্রাস ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে অনেকের।

কচুয়ার সাংদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক সাহাপাড়া এলাকার সুকদেব সাহা বলেন, কৃষি ডিপ্লোমা পড়া অবস্থায় সবজি ও ধান চাষ করতাম। রাসায়নিক সারের ক্ষতি সম্পর্কে জানলেও সহজলভ্য বিকল্প না থাকায় বাধ্য হয়ে ব্যবহার করতে হত। বছর খানেক হল, ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করি। আমার জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার প্রায় ৭০ শতাংশ কমেছে। সেই সঙ্গে ব্যয়ও কমেছে। কেঁচো সার ব্যবহার করা জমির সবজি ও খাদ্যশস্যের স্বাদও অনেক ভাল।

উপজেলা সদরের হাজীপাড়া এলাকার মিরাজুল শেখ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ৫ কাঠা জমি ফেলানো (পতিত) ছিল। সারের দাম বেশি থাকায় চাষ করতাম না। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ব্যবসার পাশাপাশি ভার্মি কম্পোস্ট দিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছি। চার মাসে প্রায় ৫ হাজার টাকার লাল শাক, লাউ, মুলা ও পালন শাক বিক্রি করেছি। নিজেদের খাবার জন্য এখন তরকারি ক্রয় করা লাগে না।

ক্রেন প্রকল্পের কনসোর্টিয়াম ম্যানেজার কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইমরানুল হক জানান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে রাসায়নিক সারের ব্যবহার হ্রাস ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য ভার্মি কম্পোস্টের ব্যবহার সম্প্রসারণের চেষ্টা করেছি। চার উপজেলার ৩০০ জন উপকারভোগীকে ভার্মি কম্পোস্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি প্লান্ট স্থাপনের জন্য তিনটি করে ঋণ-স্লাপ ও আনুসঙ্গিক অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এসব উপকারভোগী নিজের ক্ষেতে কেচো সার ব্যবহারের পাশাপাশি বিক্রি করছেন। এই প্রক্রিয়া যাতে চলমান থাকে এ জন্য আমরা স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে ভার্মি কম্পোস্ট উদ্যোক্তাদের যোগাযোগ স্থাপন করিয়েছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে ভার্মি কম্পোস্ট সারের ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। এই সার ব্যবহারের ফলে জেলায় পতিত জমি চাষাবাদ বেড়েছে। বর্তমানে আমাদের ১ হাজার ৩৬৪টি বাড়িতে পুষ্টি বাগান রয়েছে। যাদের বেশিরভাগ উপকারভোগী কেঁচো সার ব্যবহার করেন। এছাড়া যেসব চাষির গরু আছে তাদেরকে ভার্মি কম্পোস্ট প্লান্ট স্থাপনে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ভার্মি কম্পোস্ট প্লান্ট ও কেচো সারের ব্যবহার বাড়ছে বলে জানান জেলা কৃষি বিভাগের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির পদ্ধতি চ্যালেঞ্জঃ ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির মূল কাঁচামাল হচ্ছে গোবর ও কেচো। গোবর ও কেচোর সঙ্গে লাগবে চাড়ি বা ঋণ ও সেলাপ। একটু ছায়াযুক্ত স্থানে স্লাপের ওপর ঋণ রাখতে হবে। ঋণের মধ্যে আধা শুকনা গোবর দিতে হবে এবং সেই গোবরের ওপরে কেচো ছেড়ে দিতে হবে। এরপর উপরে ছালা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। উপড়ে ছাউনি দিতে হবে। ১০ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সেই গোবর ব্যবহার উপযোগী সার হয়ে যাবে। এই সারে কোনো গোবরের গন্ধ থাকবে না। শুধু গরুর গোবর নয়, হাঁস-মুরগির বিষ্টা, ছাগল-ভেড়ার মল এবং মহিষের গোবরও ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। সরাসরি বৃষ্টির পানি পড়লে এবং পিঁপড়া ঢুকলে কেঁচো মারা যাবে। সূর্যের আলো সরাসরি পড়লেও কেঁচো মারা যাবে। এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৩, ২০২৩ ৭:৩২ অপরাহ্ন
ধানে চিটা হওয়ার কারণ ও সমাধান
কৃষি গবেষনা

বোরো ধান উৎপাদনে উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব –
মার্চ মাসের ৩য় সপ্তাহ থেকে দিনের বেলার তাপমাত্রা প্রায়শই ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়েও বেড়ে যাচ্ছে। যা ধানের ফুল ফোটা পর্যায়ে চিটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ধান গাছের জীবনচক্রের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের তাপমাত্রায় গাছের বাড়-বাড়তি প্রভাবিত হয়। আমাদের দেশে চাষকৃত জাতসমূহ সাধারনত: ২০-৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস গড় তাপমাত্রায় বৃদ্ধি ও উন্নয়ন সবচেয়ে ভালো হয়। তাপমাত্রা এর চেয়ে উপরে বা নিচে চলে গেলে ধান গাছের বৃদ্ধি ও উন্নয়ন ব্যহত হয়।
তবে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে সাধারনত: প্রজনন পর্যায় যথাঃ শীষ গঠন ও ফুলফোটা/পরাগায়ন এবং দানা ভরাট/গঠন পর্যায়ে দিনের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা এর চেয়ে বেশী হলে ধানে চিটা সমস্যা ও দানার পুষ্টতা বাধাগ্রস্থ হয়।
ধানের বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বৃদ্ধি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হলেও ফুলফোটা পর্যায়ে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা এর চেয়ে বেশী হলে ধানে চিটা সমস্যা দেখা দেয়।
সাধারনত: ফুলফোটা পর্যায়ে দিনের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর বেশী হলে ঐদিন যে ফুলসমূহ ফুটবে তা চিটা হয়ে যাবে এ কারনে সম্পূর্ন শীষ চিটা হবে না।
আমাদের দেশে দীর্ঘ জীবনকালের বোরো ধানের জাত সমূহ, নাবী বোরো ও আউস ধানে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে চিটা সমস্যা দেখা যায়। এছাড়াও এসময়ে চাষকৃত জাতসমূহ রাত্রীকালীন উচ্চ তাপমাত্রা এবং ঝড়ের কারণে দানার পুষ্টতা বাধাগ্রস্থ হয় ও দানা কালো বর্ণ ধারণ করে ফলে বীজ ও ধানের মান এবং ফলন কমে যায়।
উচ্চ তাপমাত্রার ক্ষয়ক্ষতি ও প্রভাবঃ
প্রজনন পর্যায়ে অতি উচ্চ তাপে (৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা এর বেশী হলে) শিষে ধানের সংখ্যা কমে যেতে পারে।
ফুল ফোটা পর্যায়ে অথবা পরাগায়ণের সময় উচ্চ তাপে (৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা এর বেশী হলে) ধানের পরাগায়ন বাধাগ্রস্থ হয় ফলে চিটার সংখ্যা বেশী হয়।
রাত্রীকালীন উচ্চ তাপমাত্রা (২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা এর বেশী হলে) ও ঝড়ের কারণে দানার পুষ্টতা বাধাগ্রস্থ হয় ও দানা কালো বর্ণ ধারণ করে।
ফুল ফোটা পর্যায়ে অথবা পরাগায়ণের সময় ইট-ভাটার আশে-পাশের জমিতে উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাবের কারণে ধানের শীষ আগুনে-ঝলসে যাওয়ার মত লক্ষণ দেখা যায় ফলে চিটার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যায় ও দানার পুষ্টতা বাধাগ্রস্থ হয় ও ফলন ব্যাপকহারে কমে যায়।
ক্ষয়ক্ষতি পূরণে ব্যবস্থাপনাঃ
চৈত্র ও বৈশাখ (এপ্রিল) মাসের উচ্চ তাপমাত্রা প্রাকৃতিক বিধায় প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, তবে বোরো ধানের জাত নির্বাচন এবং এদের বপন ও রোপন সময় সমন্বয় করে এ সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
স্বল্প জীবনকালের বোরো ধানের জাত যথা: ব্রি ধান২৮, অগ্রহায়ন মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বপন এবং ৪০-৪৫ দিন বয়সের চারা রোপন করে প্রজনন ও ফুল ফোটা পর্যায়ে চৈত্র ও বৈশাখ (এপ্রিল) মাসের উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব এড়ানো সম্ভব।
দীর্ঘ জীবনকালের বোরো ধানের জাত সমূহ যথা: ব্রি ধান২৯ ও ব্রি ধান৫৮, কার্তিক মাসের ৩য়-৪র্থ সপ্তাহের মধ্যে বপন এবং ৪০-৪৫ দিন বয়সের চারা রোপন করে প্রজনন ও ফুল ফোটা পর্যায়ে চৈত্র ও বৈশাখ (এপ্রিল) মাসের উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব এড়ানো সম্ভব।
জমিতে সেচ প্রদান করে এবং পানি ধরে রেখে চৈত্র ও বৈশাখ মাসের উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব কিছুটা কমানো যেতে পারে।
ধানের জমির আশে-পাশে ইট-ভাটা স্থাপনের অনুমোদন না দেওয়া অথবা ইট-ভাটার আশে-পাশে ধান চাষ না করা।
উচ্চ তাপমাত্রা সহিষ্ণু ধানের জাত চাষ করতে হবে।
এসময় করণীয়:-
ক)জমিতে পানি ধরে রাখুন।
খ) কাইচ থোর পর্যায়ে পটাশ, জিবি বোরন, মাইটিভিট, জিবি জিংক এবং কেমোজল জাতীয় ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে পারেন।
গ) ১০লিটার পানিতে ৬০গ্রাম পটাশ সার+৬০গ্রাম মাইটিভিট একত্রে মিশিয়ে ৫শতক জমিতে স্প্রে করতে পারেন।
বিস্তারিত পরামর্শের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়ে অথবা ইউনিয়ন/ ব্লক পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিন।
তথ্যসূত্র :
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২৭, ২০২২ ৫:৩১ অপরাহ্ন
অনুমোদন পেল উদ্ভাবিত ধানের আরও তিনটি জাত
কৃষি গবেষনা

জাতীয় বীজবোর্ডের অনুমোদন পেল বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত আরো তিনটি নতুন ধানের জাত। গতকাল সোমবার জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৮তম সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। ব্রি উদ্ভাবিত নতুন তিনটি জাতের মধ্যে ব্রি ধান ১০৩ আমন মৌসুম, ব্রি ধান ১০৪ ও ব্রি হাইব্রিড ধান ৮ বোরো মৌসুমের জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় বীজ বোর্ডের সভাপতি ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ধানের জাতগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) ব্রি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন উদ্ভাবিত ব্রি ধান ১০৩ আমন মৌসুমের একটি জাত। জাতটির কৌলিক সারি BR (Bio) 8961- AC26-16। ব্রি ধান ২৯-এর সঙ্গে FL378 এর সংকরায়ণ করা এবং পরবর্তী সময়ে F1 generation-এ অ্যান্থার কালচার পদ্ধতি (জীবপ্রযুক্তি) ব্যবহার করে এ জাতটি উদ্ভাবন করা হয়। এ জাতটির পূর্ণবয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১২৫ সেমি। ডিগ পাতা খাড়া। দানা লম্বা ও চিকন। ১০০০ পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৩.৭ গ্রাম। ধানে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৪%। এ জাতটির গড় জীবনকাল ১৩২ দিন। ধানের গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৬.২ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে জাতটি প্রতি হেক্টরে ৮.০ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।

ব্রি ধান ১০৪-এর কৌলিক সারি বিআর ৮৮৬২-২৯-১-৫-১-৩। কৌলিক সারিটি ব্রিতে ২০০৭ সালে আইআর ৭৪০৫২-২১৭-৩-৩-এর সঙ্গে বিআর ৭১৫০-১১-৭-৪-২-১৬- এর সংকরায়ণ করে এবং পরবর্তীকালে বংশানুক্রম সিলেকশনের (Pedigree Selection) মাধ্যমে উদ্ভাবিত হয়। ব্রি গাজীপুরের গবেষণা মাঠে হোমোজাইগাস কৌলিক সারিটি নির্বাচন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত হোমোজাইগাস কৌলিক সারিটি পাঁচ বছর ফলন পরীক্ষার পর ২০১৯ সালে ব্রির আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর গবেষণা মাঠে ও ২০২০ সালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

২০২১ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি কর্তৃক স্থাপিত প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় বেশি ফলন দিয়েছে। (পিভিটি) সন্তোষজনক হওয়ায় জাতীয় বীজ বোর্ডের মাঠ মূল্যায়ন দল কর্তৃক সুপারিশের পর জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৮ তম সভায় ব্রি ধান ১০৪ বোরো মৌসুমের উন্নত গুণাগুণসম্পন্ন জাত হিসেবে ছাড়করণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ব্রি ধান ১০৪-এ আধুনিক উফশী ধানের সব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এ জাতের ডিগ পাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা, পাতার রং সবুজ। পূর্ণবয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ৯২ সেন্টিমিটার। জাতটির গড় জীবনকাল ১৪৭ দিন। ১০০০টি পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ২১.৫ গ্রাম। এ জাতের ধান বাসমতি টাইপের তীব্র সুগন্ধিযুক্ত। এ ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৯.২ ভাগ। এছাড়া প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৮.৯ ভাগ এবং ভাত ঝরঝরে।

এ জাতের জীবনকাল ব্রি ধান ৫০-এর প্রায় সমান। ধানের গুণগত মান ভালো অর্থাৎ চালের আকার আকৃতি অতিরিক্ত লম্বা চিকন (Extra Long Slender) (৭.৫ মি.মি. লম্বা) এবং রং সাদা। প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় ১০টি অঞ্চলে ব্রি ধান৫০-এর চেয়ে ব্রি ধান ১০৪-এর ফলন প্রায় ১১.৩৩% বেশি। পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শীর্ষ ছয় স্থানে। এটি ব্রি ধান ৫০-এর চেয়ে ১৭.৯৪% বেশি ফলন দিয়েছে।

 

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop