অনিক আহমেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাচীনকালে আমাদের দেশে জমিদারি প্রথা প্রচলিত ছিল। বর্তমানে এটি বিলুপ্তির পথে থাকলেও দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় প্রাচীন স্থাপত্যে জমিদারী প্রথার ঐতিহ্য লক্ষ্য করা যায় । এসব স্থাপত্যেগুলো যাদের অধিকারে অর্থাৎ বংশধরগণ, তাদের অনেকেই এখন পুরোদস্তুর কৃষির সঙ্গে জড়িত। এমনি একজন আহসান জান চৌধুরী, যিনি তার বিশাল জমিদার বাড়িতে গড়ে তুলেছেন সমন্বিত খামার।
পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার দুলাই গ্রামে অবস্থিত এই জমিদার বাড়ির মালিক আহসান জান চৌধুরী পেশায় মেরিন চিফ ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। পূর্ব থেকেই তার শখ ছিল পরিত্যক্ত জমিকে কৃষি কাজে ব্যবহারের মাধ্যমে পারিবারিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখা। সেই উদ্দেশ্যে তিনি তার বিশাল পুকুরে মাছের চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি তার পুকুরে বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছ, কাতল, রুই, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া, শিং, বাইনসহ আরো কয়েক প্রকারের মাছ চাষ করছেন। মাছের পাশাপাশি চৌধুরী সাহেব গড়ে তুলেছেন ডেইরী খামার। ১৯৮৫ সালে মাত্র ৫/৬ টা গরু নিয়ে যাত্রা করা খামারে আজ ২ টি শেডে রয়েছে ৩২ টি দুধের গাভী ।হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান, শাহীওয়াল, সিন্ধিসহ বিভিন্ন সংকর জাতের গাভী রয়েছে তার খামারে। প্রতিটি গরুকে তিনি দৈনিক ৩-৩.৫ কেজি দানাদার খাবার এবং প্রয়োজনীয় কাঁচাঘাস দিয়ে থাকেন। প্রতিটা গাভী থেকে গড়ে ৮-১০ কেজি এবং প্রতিদিন পুরো খামার থেকে প্রায় ২ মণ দুধ উৎপাদন হচ্ছে, যা তিনি তার মিষ্টির কারখানায় ব্যবহার করে থাকেন।
তার খামারের গাভীগুলোর রোগ-বালাই অত্যন্ত কম হয়। গরুগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচাঘাসের যোগান দিতে পাশেই একটি জমিতে ঘাসের চাষ করছেন তিনি। তাছাড়া, গরু থেকে প্রাপ্ত গোবর দিয়ে তিনি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন করেছেন। এছাড়াও আহসান চৌধুরীর রয়েছে সুবিশাল একটি ফলের বাগান। এই বাগানে রয়েছে আম, কাঠাল, লিচু, বরই, পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফল। সর্বশেষ দেড় বছর আগে তিনি ড্রাগনের (পাউ ড্রাগন -২, লাল) কাটিং রোপণ করেন, যেখান থেকে অত্যন্ত সুস্বাদু ফল পাচ্ছেন।